কলকাতা: জল্পনা ছিলই, অবশেষে সেটা হল। ভারতীয় জনতা পার্টি শিবিরের নাম লেখালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘদিনের ছায়াসঙ্গী, সোনালী গুহ। তাঁর পাশাপাশি এদিন বিজেপিতে নাম লেখান তৃণমূল কংগ্রেসের সদ্য ঘোষিত প্রার্থী সরলা মুর্মু। একইসঙ্গে সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। একইসঙ্গে এ দিন দেখা গেল টলিউডের আরো এক জনপ্রিয় অভিনেত্রী তনুশ্রী ভারতীয় জনতা পার্টির শিবিরে যোগ দিলেন। যদিও আজ বিজেপি শিবিরে যোগদান এর তালিকা অনেক লম্বা। কারণ সোনালী, সরলা, রবীন্দ্রনাথ ছাড়াও এদিন বিজেপি শিবিরের নাম লেখালেন হাওড়া শিবপুরের বিধায়ক জটু লাহিড়ী, বসিরহাট দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাক্তন ফুটবলার দিব্যেন্দু বিশ্বাস। এদিন কলকাতার হেস্টিংসের রাজ্য বিজেপির প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ, সব্যসাচী দত্ত, মুকুল রায়, অর্জুন সিংয়ের উপস্থিতিতে এরা সকলে বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নেন।
তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছবি আরো স্পষ্টভাবে সামনে আসতে শুরু করে। প্রার্থী হতে না পেরে ক্ষোভ উগরে দেয় রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য থেকে শুরু করে দীপেন্দু বিশ্বাস। ক্যামেরার সামনে হাউ হাউ করে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায় সোনালী গুহকে। অন্যদিকে নিজের পছন্দের জায়গায় প্রার্থী হতে না পেরে দলবদল করার ইঙ্গিত দেন সরলা মুর্মু। শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে প্রার্থী বদল করতে বাধ্য হয় তৃণমূল কংগ্রেস। আজ বিকেলেই এরা প্রত্যেকে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখালেন। উল্লেখ্য, মালদহের হবিবপুর থেকে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ঘাসফুলের পতাকায় ভোটে দাঁড়ানোর কথা ছিল সরলা মুর্মুর। অন্যদিকে, ভোট ঘোষণা হওয়ার অনেক আগেই দলের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। তাঁর মন্তব্য ঘিরে ব্যাপক চাপ সৃষ্টি হয়েছিল দলের অন্দরেই। পরবর্তী ক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেস ঘোষণা করেছিল বয়স্কদের টিকিট দেওয়া হবে না এবার। সেই প্রেক্ষিতে অনেক বিধায়ক এবং মন্ত্রীর নাম বাদ যাওয়ার মধ্যে রয়েছে মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের নামও। এই প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছিলেন নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটে লড়বেন। তবে এখন তিনি পদ্ম শিবিরেই ঢুকে পড়লেন।
প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়ার বিষয়টা একেবারেই ভাবতে পারেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘদিনের ছায়াসঙ্গী তথা তৃণমূল নেত্রী সোনালী গুহ। সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকার দিতে দিতেই তিনি বিজেপিতে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। দাবি করেছিলেন তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে দূরে সরে যাননি, মমতাই তাকে দূরে সরিয়ে দিয়েছেন। সেই জল্পনার আজ নিরসন ঘটলো।