বামেদের প্রার্থী তালিকায় দীপ্সিতার মা থেকে পড়ুয়া সৌরনীল, প্রতীক উরের স্ত্রী, পঞ্চায়েতে বাজি জিতবেন কারা?

বামেদের প্রার্থী তালিকায় দীপ্সিতার মা থেকে পড়ুয়া সৌরনীল, প্রতীক উরের স্ত্রী, পঞ্চায়েতে বাজি জিতবেন কারা?

কলকাতা:  পঞ্চায়েত ভোটে সবুজ-গেরুয়া লড়াইয়ের মাঝে কতটা গাঢ় হবে লাল দাগ, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে রাজনৈতিক মহলে৷ তবে লড়াই যতই কঠিন হোক, বুক ঠুকে ময়দানে নামতে প্রস্তুত অনেকেই৷ তরুণতুর্কীরা তো বটেই, প্রবীণরাও কাস্তে হাতুড়ি হাতে নিয়ে রণাঙ্গনে নামতে প্রস্তুত৷ তাঁরাই হয়ে উঠতে পারে বামেদের তুরুপের তাস৷ 

হাওড়া জেলা পরিষদের প্রার্থী হিসেবে আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন দীপিকা ধর। তিনি সম্পর্কে এসএফআই-এর যুগ্ম সম্পাদক দীপ্সিতা ধরের মা। একুশের নির্বাচনে বালি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বামেদের বাজি ছিলেন এই দীপ্সিতা। ঝাঁঝালো বক্তৃতায় প্রচারে ঝড় তুলেছিলেন তিনি৷ কিন্তু ভোটবাক্সে তাঁর প্রভাব পড়েনি। দীপ্সিতার কথায়, ‘‘কঠিন সময়ে যাঁদের লাল পার্টি করার ধক আছে, তাঁরাই আমাদের সাথী, তাঁরাই আমাদের কমরেড।” এবার এসএফআই-এর যুগ্ম সম্পাদকের সামনে আরও একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ৷ পঞ্চায়েতে মাকে জিতিয়ে আনতে পারেন কি না, সেটাই এখন দেখার।

এবার আসা যাক শিরিন সুলতানার কথায়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৫৯ নম্বর জেলা পরিষদ আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তিনি৷ শিরিনের অপর একটি পরিচয় হল-তিনি এসএফআই নেতা প্রতীক উর রহমানের স্ত্রী৷ ২০১৭ সালে জেলা ছাত্রী কনভেনশানের কনভেনর ছিলেন প্রতীক-জায়া। বরাবরই ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন। স্ত্রীর প্রার্থী হওয়া নিয়ে প্রতীক উর বলছেন, ‘‘ও আমার সহধর্মিণী! তবে আমি বলব সহযোদ্ধা। প্রচণ্ড সন্ত্রাসের আবহে নমিনেশন জমা করেছে শিরিন। মনোনয়ন তুলে নেওয়ার জন্য মারাত্মক চাপ এসেছে। তার মধ্যে টিকে থাকার লড়াইকে কুর্নিশ। মাধবীলতারাই মেরুদন্ড হয়ে পিছনে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।”

আবার নদিয়ায় তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে বামেদের অস্ত্র কলেজ পড়ুয়া সৌরনীল সরকার। এত কম বয়সে ছেলের রাজনীতিতে আসার বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি তাঁর পরিবার৷ প্রার্থী হওয়াতেও ছিল অমত। অগত্যা, বাবাকে লুকিয়েই মনোনয়ন জমা দেন সৌরনীল। বিষয়টি জানতে পারেই অগ্নিশর্মা তাঁর বাবা৷ আতঙ্কে কাঁপছেন মা। ছেলেকে তাঁদের প্রশ্ন, “তুই জানিস, কার বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়িয়েছিস?” ডাকাবুকো ছেলের জবাব, “নেতা নয়, আমাদের লড়াইটা নীতির বিরুদ্ধে।”

বারাসত ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির ১৮ নম্বর আসনে প্রার্থী হয়েছেন মৌসুমী সরকার। বাম শিবিরের কনিষ্ঠতম প্রার্থীদের মধ্যে তিনি একজন৷ ২৫ বছরের মৌসুমীর কথায়, ‘‘আমার নিজের চোখে দেখা পঞ্চায়েত ভোটে শাসকদল কী পরিমাণ সন্ত্রাস চালিয়েছে। আমি যে এলাকা থেকে উঠে এসেছি সেখানে মানুষ কী চান প্রত্যেকবারেই তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু গতবার জোরজুলুম করেই শাসকদল জিতেছে। তবে আশা, যদি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট হয়,  তাহলে আমাদের এলাকায় জয় আসবেই।”

পঞ্চায়েত ভোটের আসরে নেমেছেন আনিস খানের দাদাও৷ এসএফআই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির মোট ১৪ জন সদস্য পঞায়েতে লড়ছেন। তার মধ্যে আমতা ২ নং ব্লকের কুশবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকে আমতা ২ নং পঞ্চায়েত সমিতির ৪১ নং আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন প্রয়াত ছাত্র নেতা আনিস খানের মেজ দাদা শামসুদ্দিন খান৷ 


 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *