কলকাতা: দীর্ঘ ছমাস ধরে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছেন তাঁরা। তাঁরা করোনা ফ্রন্টলাইনার্স। একটানা লড়াইয়ে ক্লান্ত এই যোদ্ধারা চেয়েছিলেন পুজোর কটা দিন পরিবার পরিজনদের সঙ্গে না থাকলেও মা দুর্গার আরাধনা করবেনষ কিন্তু বাদ সাধল সোশ্যাল মিডিয়া। মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তারের পুডোর আয়োজন বন্ধ করে দেওয়া হল সোশ্যাল মিডিয়ার কুৎসার জেরে।
পুজোর প্যান্ডেল তৈরি সারা, প্রতিমা তৈরীর কাজও প্রায় শেষের দিকে। ঠিক করা হয় মেডিক্যাল কলেজের মেন বয়েজ হস্টেলের প্রাঙ্গনে মডেল পুজো হবে। কিন্তু জুনিয়র ডাক্তারদের এই ভানাই সার হল। সোশ্যাল মিডিয়া এবং পারিপার্শ্বিক চাপের কাছে হার মেনে শেষ অবধি পুজো বন্ধ করতে বাধ্য হলেন তাঁরা। কোনও আড়ম্বর নয় নিতান্তই ষষ্ঠীর রক্তদান শিবিরের মাধ্যমে দেবীর বোধনের ইচ্ছা ছিল তাদের। কিন্তু কোনও কাজই হল না। প্রেস রিলিজ দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হল মেডিক্যালে পুজো হবে না।
প্রেস রিলিজের একটি অংশে বলা হয়েছে, ‘‘এতদূর এগোনোর পরেও আমরা সমস্ত ‘সচেতনতার’ দায় মাথায় নিয়ে পুজো ও আনুষঙ্গিক সব পরিকল্পনা বন্ধ করছি। আমরা আমাদের কলেজ, হাসপাতাল তথা চিকিৎসক সমাজের প্রতি কোনও অযথা মিথ্যা অভিযোগ-সমালোচনার কারণ হতে চাই না।’’ মেডিক্যালের পুজো বন্ধ হওয়ার প্রসঙ্গে মেডিক্যালের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস জানিয়েছেন, ‘‘হাসপাতালে পুজো হচ্ছিল না, বাইরে জুনিয়রদের পুজো করার কথা ছিল। যেহেতু হাসপাতাল চত্বরে পুজো নয়, সেহেতু অনুমতি বা বন্ধ করিয়ে দেওয়ার প্রশ্নই নেই।’’
রাজ্য সরকারের তরফে ইতিমদ্যেই জানানো হয়েছে জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কোনও কর্মীই পুজোর ছুটি পাবেন না। ফলে পুডোর দিনগুলিতে ছুটিই পাবেন না এই ফ্রন্টলাইনাররা। গোটা রাজ্যের মানুষ যখন আত্মীয় পরিজনদের নিয়ে আনন্দে মাতবেন তখন কেবলমাত্র স্বাস্থ্য পরিষেবায় যুক্ত থাকার অপরাধেই কী এসব থেকে বঞ্চিত থাকবেন তাঁরা। পরিজন ছাড়া পরিবেশে একটুও আনন্দ করার ছাড় নেই তাঁদের? মেডিক্যালের ঘটনার পর অন্তত প্রশ্ন তুলছেন করোনা ফ্রন্টলাইনাররা।