নিজস্ব প্রতিনিধি: কংগ্রেস-সিপিএমের যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে উঠে এল মসৃণ ভোট ট্রান্সফারের প্রসঙ্গ। এই প্রথম নয়, আগেও সিপিএম তথা বামেদের সঙ্গে আসন সমঝোতা করেছিল কংগ্রেস। রাজনৈতিক মহল মনে করে ২০১৬ সালের সেই বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের ভোট কংগ্রেসের দিকে এলেও উল্টোটা কিন্তু ঘটেনি। একই ঘটনা একুশের বিধানসভা নির্বাচনেও হয়েছিল বলে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মত। তবে এবার আর তা হবে না। এই লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভোটও সিপিএমের দিকে আসবে বলে দাবি করলেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। রবিবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর পাশে বসে সাংবাদিক সম্মেলনে এমনই দাবি করেছেন বিমান।
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে দেখা গিয়েছিল কম আসনে লড়েও সিপিএম তথা বামেদের থেকে কংগ্রেস বেশি আসনে জয় পেয়েছিল। কারণ হিসেবে অনেকেই মনে করেন বামেদের ভোট কংগ্রেসে গেলেও উল্টোটা ঘটেনি। অর্থাৎ ভোট ট্রান্সফার মসৃণভাবে দু’তরফের মধ্যে হয়নি বলে বামেদের অভিযোগ ছিল। এবার পরিস্থিতিটা পুরো বদলে যাবে বলে দু’পক্ষেরই দাবি। সেই সূত্রেই বিমান এমন দাবি করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। আগেই কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকদের এই বার্তা দিয়েছিলেন অধীর। অধীর নির্দেশ দিয়ে বলেছিলেন, সমস্ত জেলার কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকরা যেন সিপিএমের হয়ে প্রচারে নামেন এবং বাম প্রার্থীদের পক্ষে ভোট দেন। শীঘ্রই অধীর চৌধুরী ও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক তথা মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী মহম্মদ সেলিম যৌথ ভাবে প্রচার করবেন বলেও ঠিক হয়েছে। তাঁরা একে অপরের কেন্দ্রে গিয়েও সভা করবেন। এই পরিস্থিতিতে রবিবার সাংবাদিক সম্মেলনে বিমান বসুকে তাৎপর্যপূর্ণভাবে বলতে শোনা গিয়েছে,”কংগ্রেসের ভোট বামেদের দিকে আসবে বলে প্রত্যাশা রাখি। আগে হয়নি মানে এবারেও হবে না, তার কোনও মানে নেই। আমি তো আগে কখনও অধীরের পাশে বসে সাংবাদিক সম্মেলন করিনি। আজ করছি।”
যে দাবি বিমান করেছেন তা কী সত্যিই বাস্তবায়িত হবে? ঘটনা হল দশকের পর দশক ধরে সিপিএম তথা বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের রাজনৈতিক সংগ্রামের কথা সবাই জানেন। দুই দলের সংঘর্ষে বহু রাজনৈতিক কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। অধীর চৌধুরীর সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের বেশিরভাগ কেটে গিয়েছে সিপিএমের সঙ্গে লড়াই করে। ৩৪ বছরের বাম শাসনে কংগ্রেসের বহু কর্মী-সমর্থক সিপিএমের সন্ত্রাসে খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ। সেই জায়গায় কংগ্রেসের সমর্থকরা দ্বিধাহীন ভাবে সিপিএমকে ভোট দেবেন, এতটা কী আশা করা যায়? এমন চর্চা বহুদিন ধরেই চলছে। এই আবহের মধ্যে অধীরের পাশে বসে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু উভয় দিকে ভোট ট্রান্সফার নিয়ে যে দাবি করেছেন তার বাস্তবায়িত হয় কিনা সেটাই এখন দেখার।