কলকাতা: বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের চতুর্থ দফায় কোচবিহারের শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছিলেন ৪ ভোটার। সেই নিয়ে রাজনৈতিক উত্তাপ তুঙ্গে ওঠে যার রেশ এখনো বর্তমান। এবার সেই ঘটনায় যাদের মৃত্যু হয়েছিল তাদের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সামনে আসায় চাঞ্চল্য আরো বৃদ্ধি পেল। কারণ সেই রিপোর্ট ঘিরে রয়েছে একাধিক প্রশ্ন। জানা গিয়েছে, মৃতদের মধ্যে একজনের গুলি লেগেছে পিঠে, এমনকি মাথায় এবং গায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট মারফত জানা গিয়েছে, ১০ মিটার দূর থেকে গুলি চালানো হলেও নিহত হামিদুল মিয়ার গুলি লেগেছে পিঠে। অন্যদিকে সামিউল মিয়া বলে যিনি মারা গিয়েছেন তার শরীরে ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে বলে ক্ষত চিহ্ন রয়েছে! এর পাশাপাশি রয়েছে স্প্রিন্টারের ক্ষত। এর পাশাপাশি যার হাতে গুলি লেগেছে তার হাতে গুলি লাগার ক্ষত ছাড়া অন্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সামনে আসার পরেই বিরোধীরা আবার একজন হয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে যে, যদি আত্ম রক্ষার স্বার্থেই কেন্দ্রীয় বাহিনী গুলি চালায় তাহলে এইভাবে আঘাতের দাগ হয় কি করে। যে দূরত্ব থেকে গুলি চালানো হয়েছে সেই দূরত্ব থেকে অবশ্য ভাবে কোমরের নিচে গুলি চালানোর কথা। কিন্তু রিপোর্ট দেখে এটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে সজ্ঞানে গুলি চালানো হয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে নিয়ম মেনে পায়ে কেন গুলি চালানো হল না সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ঘটনার পর থেকেই বিজেপি দাবি করে আসে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উস্কানি মূলক মন্তব্যের জেরে ওই বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ওপর হামলা চালায় বেশ কয়েকজন। পরবর্তী ক্ষেত্রে আত্মরক্ষার জন্য গুলি চালায় কেন্দ্রীয় বাহিনী। যদিও তৃণমূল এই দাবি নস্যাৎ করে পাল্টা আক্রমণ করেছে বিজেপিকে। দাবি করা হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নির্দেশে এই কাজ করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
এই ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সামনে আসার পরেও তৃণমূল এবং বিজেপি তরজা তুঙ্গে। তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলছেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রমাণ দিচ্ছে যে সেদিন যা ঘটেছিল সেটা গণহত্যা। এই ব্যাপারে অবশ্য ভাবে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হওয়া প্রয়োজন এবং যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের অবশ্যই শাস্তি হওয়া উচিত। পাল্টা বিজেপি তরফে জয়প্রকাশ মজুমদার বলেছেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখে সব বোঝা যায় না। আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জবাব দিতে হবে যে তিনি সেদিন উস্কানিমূলক মন্তব্য কেন করেছিলেন, আর তার ফলেই সেদিনের ঘটনা ঘটেছে কিনা এর উত্তর পেতে হবে।