তমলুক: শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে যখন উত্তপ্ত বঙ্গ রাজনীতি, সেই সময় মুখ খুললেন তাঁর বাবা শিশির অধিকারী৷ স্পষ্ট জানালেন, ‘‘বিজেপিতে যাওয়ার মতো বোকামি কেউ করবে না৷’’ প্রশ্ন উঠছে, তাহলে শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে ওঠা জল্পনা কি সম্পূর্ণ অমূলক?
দীর্ঘদিন ধরেই দল ও সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অনুপস্থিত শুভেন্দু অধিকারী৷ বরং ইদানীং তিনি মন দিয়েছেন, দলীয় পরিচয়হীন জনসংযোগ কর্মসূচিতে৷ কোথাও গেরুয়াকার্ডে বিজয়া সম্মিলনীর আমন্ত্রপত্র, কোথাও দাদার অনুগামী ব্যানারে অনুষ্ঠানে গিয়ে ‘ঘরের লোক’ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা ঘিরে রাজনৈতিক মহলের উত্তেজেনা বাড়িয়েছে৷ রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রীর তাহলে বিজেপিতে যাওয়া শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা? তা নিয়ে শুরু হয়েছে নানান চর্চা৷ তারমধ্যেই ছেলের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে মুখ খুললেন শিশির অধিকারি৷ পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন, ‘‘কেউ বিজেপিতে যাওয়ার মতো বোকামি করবে না৷’’ বাবার মন্তব্য যদি সত্যি হয়, তাহলে প্রশ্ন, শুভেন্দু অধিকারী কি তাহলে তৃণমূলেরই থাকছেন? পুরো বিষয়টিই কি ভিত্তিহীন? নাকি আপাতত পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্যই এমন মন্তব্য? চর্চা রাজনৈতিক মহলে৷
আগামী সপ্তাহে রাজ্য সফরে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ৷ সে প্রসঙ্গে শিশির অধিকারী বলেন, ‘‘আমাদের জেলায় এসে কোনও লাভ নেই৷ আগেও এসেছেন৷ তৃণমূলকে গালিগালাজ করে ছেন৷ এই জেলায় বিজেপির কোনও দাপট নেই৷ কেউ বিজেপিতে যাবে না৷’’ তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘‘দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, কৈলাশ বিজয়বর্গীয় এবং সৌমিত্র খাঁয়ের মধ্যে মতবিরোধ দেখা গিয়েছে৷ তা মেটাতেই রাজ্যে আসছেন অমিত শাহ৷’’
শিশির অধিকারীর মন্তব্যের পরও জল্পনা কমছে না। কারণ, শুভেন্দু অধিকারীকে বিজেপিতে যোগদানের আহ্বান জানিয়েছেন সৌমিত্র খাঁ এবং দিলীপ ঘোষ৷ সম্প্রতি সৌমিত্র খাঁ বলেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারী বলতে চান, বাংলার স্বার্থে রাজ্যে পরিবর্তন দরকার৷ তিনি মানুষের জন্য কাজ করতে চান৷ সেই জন্য আমরা চাই তিনি দ্রুত তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিন৷’’ অন্যদিকে, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা দরজা খুলে রেখেছি৷ সবাইকে নেওয়ার জন্য৷ ওঁনারা কাউকে পাঠালে আমরা নেব৷ একজন রাজনীতিবিদ রাজনীতি করতে চাইলে সুযোগ দেবে বিজেপি৷ তবে আমার সঙ্গে কারও কোনও আলোচনা হয়নি৷’’ এর আগে মুকুল রায় বিজেপিতে যোগদানের পরও তৃণমূলেই ছিলেন ছেলে শুভ্রাংশু রায়৷ তেমনই চিত্র কি দেখা যাবে পূর্ব মেদিনীপুরের? উত্তর দেবে সময়৷ -ফাইল ছবি৷