রানাঘাট: এখনও স্বামীর মৃত্যুশোক দগদগে তারমধ্যেই তাঁর ফেলে যাওয়া রাজপাটের দায়িত্ব এসে পড়ল কাঁধে। ঠিকই ধরেছেন রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী রূপালী বিশ্বাসের কথাই বলছি। গত মাসেই বগুলার ফুলবাড়ি এলাকার এক বিগবাজেটের সরস্বতী পুজোর উদ্বোধনে গিয়ে খুন হয়ে যান তাঁর স্বামী তথা কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গিয়ে তিনি তখন মঞ্চেই ছিলেন। দুষ্কৃতীরা খুব কাছ থেকে তাঁকে গুলি করে, কানের পাশে মৃত্যুশেল তার উপস্থিতি জানান দেয়। আনন্দ অনুষ্ঠানে নেমে আসে দুঃখের ছায়া। তড়িঘড়ি আহত বিধায়ককে কৃষ্ণগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এই ঘটনা রূপালীদেবীর তিন বছরের দাম্পত্য জীবনকে অতীত করে দেয়। দেড় বছরের শিশুকন্যাকে কোলে নিয়েই বছর পঁচিশের গৃহবধূ বৈধব্যকে বরণ করে নেন। বাকিটা অত্যন্ত কঠিন, প্রথমে সহানুভূতির ঢল নামলেও আটপৌঢ়ে রূপালীদেবী জানতেন না তাঁর ও সন্তানের ভবিষ্যৎ কী। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানতেন তাই ওই বিধায়কের মৃত্যুর পরেপরেই জানিয়ে দেন, এই ঘটনার দায় বিজেপির। তারাই রানাঘাট দখল করতে নক্ক্যারজনক ঘটনাটি ঘটিয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকায় মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রভাব প্রতিপত্তি যথেষ্ট, মত বিধায়কও ওই সম্প্রদায়ের একজনই ছিলেন। তাঁকে খুনের পর কোনওভাবে মতুয়া সমপ্রদায়কে বিজেপি যাতে হাতের মুঠোয় আনতে না পারে সেদিকে তৃণমূল নেত্রীর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ছিল। লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হতেই তাই আর দেরি করেননি। প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে রূপালীদেবীর নাম জানিয়ে দিলেন।
একরত্তি মেয়েক নিয়েছে বছর পঁচিশের তরুণী যে একা নন, তৃণমূল দল যে তাঁর পাশে আছে একথা মনে করাতে ভোলেননি দলীয়নেত্রী। এদিকে গুরুদায়িত্ব পেয়ে হকচকিয়ে গেলেও স্বামীর খুনীদের শাস্তি দিতে বদ্ধপরিকর রূপালী জানালেন, দল যেমনভাবে চাইবে তেমনভাবেই তিনি কাজ করবেন। মেয়ের ভবিষ্যতের পাশাপাশি এলাকার বাসিন্দাদের ভালমন্দও আজ থেকে তাঁরই দায়িত্বে।