শিলিগুড়ি: ট্রেজারিতে অর্থ দফতরের অনুমোদন মেলেনি তাই মাসের পয়লা তারিখ পেরিয়ে গেলেও বেতন পেলেননা শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ কর্মীরা। নিয়মমতো প্রতি মাসে ৩০ তারিখ থেকে বেতনের নথিপত্র তৈরির পর ট্রেজারিতে অনুমোদন হয়ে যায়। সেই অনুযায়ী প্রতি মাসের পয়লা তারিখেই কর্মীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে যায়। কিন্তু এবছর পে কমিশনের নির্দেশ মেনে নতুন বেতন কাঠামো অনুসারে বেতন দেওয়ার জন্য নতুন করে সমস্ত কর্মীদের তথ্য নথিভুক্ত করার কথা বলা হয়েছিল।
সমস্ত বিভাগের সরকারি কর্মচারীদের এই তথ্য পুনর্বিবেচনা করে স্বাক্ষর করার পর অর্থ দপ্তরের অনুমোদন নেওয়ার দায়িত্বে আছেন একজন 'ড্রয়ই অ্যান্ড ডিসবার্সমেন্ট' অফিসার (ডিডিএসও)। কমিশনারেট সূত্রে খবর, শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (সদর) অমিতাভ মাইতি এই পদে ছিলেন। রাজ্যের সমস্ত সরকারি দফতরের মতো শিলিগুড়ি পুলিশকেও ১৫ জানুয়ারির মধ্যে নতুন বেতন কাঠামো অনুসারে প্রত্যেক কর্মীর তথ্য দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। পরে আবার সময় বাড়িয়ে ২০ জানুয়ারি করা হয়। পুলিশকর্মীদের নতুন বেতন কাঠামোর জন্য জমা দেওয়া তথ্য বহু ক্ষেত্রেই ত্রুটিপূর্ণ ছিল। সব মিলিয়ে দেখে ত্রুটিপূর্ণ নথি সংশোধনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য দায়িত্বভার ছিল অমিতাভ মাইতির ওপর। কিন্তু গত ২৪ জানুয়ারি তিনি আলিপুরদুয়ারের এসপির পদে নিযুক্ত হন। পরিবর্তে আসেন অঞ্জলি সিংহ। এই পরিবর্তনের জেরে নথিপত্র তৈরির প্রক্রিয়া বেশকিছুদিন ব্যাহত হয়।
এরপর সরস্বতী পুজো থেকে টানা পাঁচ দিন সরকারি ছুটি থাকায় সেই কাজ আরও পিছিয়ে যায়। ফলে পে কমিশনের সুপারিশ অনুসারে নতুন বেতন কাঠামোর নথিপত্র সময়মতো তৈরি না হওয়ায় শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ কর্মীদের বেতন আটকে গিয়েছে বলে অভিযোগ। কমিশনারেট সূত্রে আরও জানা গেছে, গত আট বছরে এই প্রথমবার কর্মীরা সময়মতো বেতন পেলেন না। সোমবার ঘটনার কথা জানার পরেই খোঁজখবর শুরু করে নবান্ন। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সমস্ত পুলিশকর্মীকে বেতন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। শিলিগুড়ির এই কমিশনারেটের অধীনস্থ কনস্টেবল, এএসআই, এসআই, ইন্সপেক্টর মিলিয়ে মোট ১৬০০ জন পুলিশ কর্মী আছেন। নতুন বেতন কাঠামো অনুসারে সবার বেতন মিলিয়ে প্রতি মাসে ৬ কোটি টাকার বেশি প্রয়োজন।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার ত্রিপুরারি অর্থব জানিয়েছেন নথিপত্রের সমস্যা মিটে গেলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সমস্ত কর্মীর বেতনের ব্যবস্থা করা হবে। তবে সরকারি নির্দেশিকা থাকা সত্ত্বেও পে কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করে সময়মতো নথিপত্র জমা না হওয়ায় ক্ষুব্ধ পুলিশকর্মীরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করছেন।