বারাসাত: আগামী বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে রাজনীতির রণাঙ্গনে নামতে চলেছেন সংখ্যালঘু ধর্মগুরু আব্বাস সিদ্দিকী৷ সোমবার উত্তর চব্বিশ পরগণার কদম্বগাছিতে সিদ্দিকির ধর্মসভা কার্যত পরিণত হল রাজনৈতিক জনসভায়। বারাসাত লাগোয়া দেগঙ্গা বিধানসভার কদম্বগাছি ওলার মঞ্চ থেকে তিনি মিলিয়ে দিলেন ধর্ম ও রাজনীতিকে৷
এদিন সিদ্দিকি বলেন, তাঁর প্রতিষ্ঠিত সংগঠন আহালে সুন্নাত উল জামাত সংখ্যালঘু ও দলিতদের স্বার্থরক্ষায় ৪৪টি বিধানসভা আসনে প্রার্থী দেবে। এরমধ্যে উত্তর চব্বিশ পরগণার ৩৩টি আসনের মধ্যে আমডাঙ্গা ও দেগঙ্গা সহ ৯টি আসনে প্রতিদ্বন্দিতা করবে তাঁর দল। তাঁর কথায়, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে তিনি প্রধান চালিকা শক্তি হতে চলেছেন৷ আব্বাস সিদ্দিকী সাফ জানিয়ে দিলেন, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে আসন সমধোতার প্রশ্ন উঠলে তিনি তৃণমূলকেই এগিয়ে রাখবেন৷ কিন্তু তৃণমূল আসন সমঝোতা করতে না চাইলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে “বিদায়” করে দেবেন তিনি।
আরও পড়ুন- মমতাকে জড়িয়ে অশালীন মন্তব্য অনুপমের, পুলিশে অভিযোগ দায়ের তৃণমূলের
তবে তিনি কোনও ভাবেই যে বিজেপি’র সঙ্গে হাত মেলাবেন না, সে কথাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন৷ তাঁর কথায়, গণতান্ত্রিক দেশে কোনও দলকে আমরা খারাপ বলতে পারি না৷ কিন্তু তাদের আদর্শ, তাদের সংবিধান বিরোধী কার্যকলাপ দেখে খারপ লাগে৷ ক্রমাগত উস্কানিমূলক মন্তব্য করা হচ্ছে৷ বিশেষ একটি ধর্মকে টার্গেট করা হচ্ছে৷ যাঁরা দেশপ্রেমিক বা শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ, তাঁরা কোনও দিনই বিজেপিকে সমর্থন করতে পারে না৷ আমি ধর্মনিরপেক্ষ দেশের নাগরিক৷ ভারত ধর্ম নিরপেক্ষ থাক, আমি এটাই চাই৷ তাই আমার পক্ষে বিজেপি-কে কোনও দিন থেকেই সহযোগিতা করা সম্ভব নয়৷
সিদ্দিকি জানান, তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও কারণে আসন সমঝোতা না হলে কংগ্রেস ও বামেদের কথা ভাববেন তিনি৷ কিন্তু শর্ত একটাই, ৪৪টি আসন দিতে হবে তাঁকে৷ এই ৪৪টি আসনে তিনি জিতবেন বলেও আত্মবিশ্বাসী সিদ্দিকি৷ তিনি বলেন, সবকটি আসনে ব্যাপক ভাবে সাড়া পাব আমরা৷ যে দল তাঁর এই শর্তে রাজি হবে তিনি তার হাতই ধরবে৷
আরও পড়ুন- বিদায় পর্বে ফের কি দাপট দেখাবে বার্ষা? কী বলছে হাওয়া অফিস
এমনকী সহযোগী প্রধান রাজনৈতিক দলের হয়ে অন্য ২৫০টি আসনে সাধ্যমত প্রচার করবেন বলেও জানিয়েছেন এই সংখ্যালঘু ধর্মগুরু৷ তাদের হয়ে গলা ফাটাবেন তিনি৷ তাঁর দাবি, রাজ্যের ১২৬টি বিধানসভা কেন্দ্রে তাঁর প্রচুর অনুগামী রয়েছে। আত্মবিশ্বাসের সুরেই সিদ্দিকি বলেন, বঞ্চিত সংখ্যালঘু ও দলিতদের জন্য তাঁর লড়াইয়ের অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে তাঁকে ৪৪টি আসনে প্রার্থী দিতে সম্মত হলেই ক্ষমতায় থাকবে তৃণমূল৷ এই প্রস্তাবে তৃণমূল রাজি না হলে তাদের গদিচ্যুত হতে হবে বলেও তাঁর ঘোষণা।