কলকাতা: জল্পনা বেশ কিছুদিন ধরেই চলছিল৷ এবার সেই জল্পনায় কার্যত জল ঢেলে মন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিলেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতা শুভেন্দু অধিকারী৷ মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে পদত্যাগের চিঠি পাঠিয়েছেন শুভেন্দু৷ রাজ্যপালের কাছেও তিনি তাঁর ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন বলে খবর৷ টুইট করে শুভেন্দুর পদত্যাগপত্রের প্রাপ্তি স্বীকার করেছেন রাজ্যপাল৷ শুভেন্দুর ইস্তফার পর খবর ছড়িয়ে পড়ে তিনি নাকি শনিবার দিল্লি যাচ্ছেন৷ কিন্তু, পরে জানা গিয়েছে, শুভেন্দুর দিল্লি যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই৷ খুব সম্ভবত আজ বিকেলে শুভেন্দু সাংবাদিক বৈঠক করবেন বলে জানা গিয়েছে৷ রাজ্যের মানুষকে সেবা করার সুযোগ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ৷ পদত্যাগত্রে উল্লেখ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী৷
মন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার আগে প্রায় জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা প্রত্যাহার করেছেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী৷ সরকারি নিরাপত্তা ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা রয়েছেন তৃণমূলের এই শীর্ষ নেতা৷ চেয়ারম্যান পদ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার পর শুভেন্দুর নিরাপত্তা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ঘিরে নতুন করে শুরু হয়েছে জল্পনা৷
আচমকা সরকারি মনোনীত হুগলি নদী ব্রিজ কমিশনার বা এইচআরবিসির চেয়ারম্যান পদ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা করেছেন শুভেন্দু৷ এরপর সরকারি সমস্ত নিরাপত্তার প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নতুন করে জল্পনার মাত্রা বাড়ি দেয়৷ মন্ত্রী হিসাবে এতদিন প্রায় জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পেয়ে এসেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী৷ নিজের পাইলটকার ও এসকর্ট ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি৷ সরকারি নিরাপত্তা ছাড়ার পর আজ দুপুরে মন্ত্রী পদ থেকে শুভেন্দুর ইস্তফা নতুন করে জল্পনা বাড়িয়েছে৷ মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর এবার কি দল ছাড়বেন শুভেন্দু? জল মাপছে তৃণমূল৷
রাজ্য পুলিশ সূত্রে খবর, শুভেন্দু জেড ক্যাটাগরি নিরাপত্তা ছাড়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন৷ নিজেই সিদ্ধান্ত জানিয়ে নিরাপত্তা ছেড়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন তিনি৷ কিন্তু আচমকা কেন এই সিদ্ধান্ত? ইতিমধ্যেই সঙ্গে দফায় দফায় তৃণমূলের শীর্ষ এক সাংসদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন শুভেন্দু৷ সেখানে ক্ষোভ কমানো চেষ্টা হলেও মেলেনি সমাধান৷ বৈঠকে বরফ গলার আগেই হলদি নদী ব্রিজ কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান পদ ছেড়ে দেওয়া ও মন্ত্রী হিসেবে নিরাপত্তা প্রত্যাহার ও মন্ত্রিত্ব পদ থেকে ইস্তফা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ৷
এর আগে দলের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদ হারিয়েছেন শুভেন্দু৷ হুগলি নদী ব্রিজ কমিশনারের চেয়ারম্যান পদ থেকেও দিয়েছেন ইস্তফা৷ এতদিন শুভেন্দুর হাতে সব থেকে বড়পদ ছিল মন্ত্রিত্ব৷ একের পর এক পদ থেকে ইস্তফা, নিরাপত্তা প্রত্যাহারের পর মন্ত্রি পদ ছেড়ে দেওয়ার ঘটনা যথেষ্ট অস্বস্তিতে তৃণমূল শিবির৷ সরকারি এইচআরবিসি চেয়ারম্যান পদ থেকে শুভেন্দুর ইস্তফা ও সরকারি নিরাপত্তা ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত দলের অন্দরে শুরু হয়েছে জল্পনা৷ তৃণমূলের একাধিক প্রথমসারির নেতাদের অনুমান ছিল, পরপর দু’টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত শুভেন্দুর দলত্যাগের প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ৷ এরপর আজ শুভেন্দু মন্ত্রিত্ব থেকেও ইস্তফা দেওয়ার ঘটনা নতুন বিতর্ক তৈরি করেছে৷ তৃণমূল নেতাদের একাংশের অনুমান সত্যি করে শুভেন্দু আদৌ মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর দল ছাড়বেন? অতঃপর তাঁর দলত্যাগ স্রেফ সময়ের অপেক্ষা বলেও মনে করছেন অনেকে৷
