কুলতলি: বিধানসভা নির্বাচনের আর তিন মাসও বাকি নেই। ভোট যে দরজায় কড়া নাড়ছে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক আবহেই রয়েছে তার প্রমাণ। প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো বিষয়কে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত বাদানুবাদে জড়াচ্ছেন শাসক ও বিরোধী দলের নেতারা। সেই আবহে কুলতলির জনসভা থেকে সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারীকে তীব্র আক্রমণ করলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
বস্তুত তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বারবার বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন শুভেন্দু অধিকারী। সরাসরি ‘তোলাবাজ ভাইপো হঠাও’ স্লোগান দিয়ে তুলেছিলেন অভিযোগও। বিজেপি নেতার সেই অভিযোগের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক বার সরব হয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এদিনের জনসভা থেকে তিনি ছুঁড়ে দিয়েছেন প্রকাশ্য চ্যালেঞ্জ।
এদিন দক্ষিণ ২৪ পরগণার কুলতলি এলাকা থেকে জনসভায় যোগ দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেখান থেকে সারদা কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সুদীপ্ত সেনের লেখা একটি চিঠি জনতার উদ্দেশ্যে তুলে ধরেন তিনি। সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতেই এদিন অভিষেক বাবুর অভিযোগ, ‘‘শুভেন্দু অধিকারী সুদীপ্ত সেনের কাছ থেকে জনগণের ৬ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন।’’ সভা মঞ্চ থেকে চিঠি পাঠ করে তিনি আরো জানান, ‘‘সুদীপ্ত সেনকে ব্ল্যাকমেইলও করতেন শুভেন্দু অধিকারী।’’
এখানেই শেষ নয়, বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলে প্রকাশ্য জনসভায় তাঁর উদ্দেশ্যে খোলা চ্যালেঞ্জও ছুঁড়ে দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “তোলাবাজ ভাইপো বলছে, শুভেন্দু অধিকারী ঘুষখোর, পারলে আমার বিরুদ্ধে মামলা করে আমাকে জেলে ঢুকিয়ে দেখাক।” শুধু শুভেন্দু অধিকারীই নয়, এদিন তাঁর আক্রমণের নিশানায় ছিলেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বও। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপির কেন্দ্রীয় সভাপতি কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে তিনি বহিরাগত বলেও উল্লেখ করেছেন। বঙ্গ বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষকে বলেছেন ‘গুণ্ডা’। এদিনের জনসভায় প্রথম থেকে আক্রমণাত্মক ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে তোলাবাজ ঘোষণা করতে পারলে তিনি মৃত্যুবরণ করবেন বলেও জানিয়েছেন অভিষেক বাবু। একুশের ভোটের আগে রীতিমতো তপ্ত আবহই আরো একবার প্রকাশ্যে আনল এদিনের কুলতলির জনসভা।