কলকাতা: দিন দুয়েক আগেই প্রবীণ তৃণমূল নেতা শিশির অধিকারী মন্তব্য করেছিলেন, ‘অধিকারী পরিবার বেইমান নয়।’ তাঁর এই উক্তির একমাত্র কারণ সাম্প্রতিক সময়ে ছেলে শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে তৈরি হওয়া জল্পনা। রাজ্য রাজনীতিতে এই মুহূর্তে বড় খবর, খবর না বলে জল্পনা বলাই শ্রেয়, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন শুভেন্দু। যদি শিশির অধিকারীর মন্তব্য ধরা হয় তবে তৃণমূল শিবিরের আশঙ্কার কোনও কারণ নেই। কিন্তু আশঙ্কা রকটা থেকেই যাচ্ছে।
অত্যন্ত প্রভাবশালী নেতা শুভেন্দুর হঠাৎ দলত্যাগ করার প্রশ্ন আসছে কেন। এর একটা বড় কারণ অবশ্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো অভিষেকের রাজনীতিতে আগমন। ২০১৫ সালে শুভেন্দুকে সরিয়ে যুব তৃণমূল সভাপতি করে দেওয়া হয় অভিষেককে। এখান থেকেই চাপা টেনশনের শুরু। এতে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে রাজনীতিতে শুভেন্দুর ক্রমে ক্রমে বড় ‘ফিগার’ হয়ে ওঠায়। দল তো বটেই, সরকারেও শুভেন্দুর প্রভাব অগ্রাহ্য করা সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতিতে তাই অভিষেকের সঙ্গে টক্কর লাগার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
তৃণমূল কর্মীদের একাংশের ভয়, দল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে না যোগ দিয়ে বসেন শুভেন্দু। নতুন দল গঠন করে আগামী রাজ্যসভা নির্বাচনে লড়ার কথাও শোনা যাচ্ছে আনাচে কানাচে। এই টালমাটাল অবস্থায় হাল ধরতে সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরই শরণাপন্ন হতে হচ্ছে তৃণমূলকে। সবার আশা এই সংশয় কাটিয়ে দেবেন দিদিই।
তবে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জল্পনায় খানিকটা হলেও জল ঢেলে দিয়েছেন শুভেন্দু নিজেই। তিনি দিল্লিতে গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে দেখা করতে গেছেন এমন একটা গুজব হাওয়ায় ভাসছিল। কিন্তু দেখা গেল হলদিয়াতেই এক গণেশ পুজোর উদ্বোধনে হাজির হয়েছেন তিনি। শুক্রবার কলকাতায় এসেছিলেন হাসপাতালে ভর্তি মাকে দেখতে। এদিকে শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে থাকা বেশ কিছু দলীয় কর্মী আশঙ্কায় আছেন। তাদের ভয়, ‘দাদা’ যদি বিজেপিতে যোগ দেন তবে কেন্দ্র রক্ষা করবে। কিন্তু নন্দীগ্রামে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক কেস ফের খুলে দেবে তৃণমূল সরকার। তাই শুভেন্দুর সঙ্গেই তার অনুগামীরাও যে চট করে দলবদল করে ফেলতে পারবেন, এমনটা নয়। আপাতত বেশ জটিল অবস্থাতেই আটকে পড়ে শুভেন্দু-পর্ব।