অভিযোগ না পেলে কেন শুভেন্দুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবে পুলিশ? প্রশ্ন বিচারপতির

অভিযোগ না পেলে কেন শুভেন্দুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবে পুলিশ? প্রশ্ন বিচারপতির

9a78dc83199d9eb34bcde7a04403071f

কলকাতা:  মানিকতালা, নন্দীগ্রাম, কাঁথি এবং তমলুক থানায় আলাদা আলাদা অভিযোগ রয়েছে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে৷ নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়কের দাবি, হয় এই মামলাগুলি সিবিআইকে দিয়ে তদন্ত করা হোক। নয়তো তাঁর বিরুদ্ধে চলা মামলাগুলি খারিজ করা হোক। তাঁর দাবি, তিনি কোনও মামলায় অভিযুক্ত নন। 

আরও পড়ুন- ‘লক্ষ্মী’র লাইনে চরম বিশৃঙ্খলা, পদপিষ্ট বহু মহিলা! মালদহের স্কুলে চরম বিশৃঙ্খলা

এর পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বলেন, মানিকতলা থানায় শুভেন্দুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে৷ তাছাড়া অভিযুক্ত কখনই বলতে পারেন না কীভাবে তদন্ত করা হবে। তাঁরা কোনও তদন্তকারী সংস্থাও ঠিক করতে পারেন না৷ বিরোধী দলনেতা যে অভিযোগে মামলা করেছেন তার গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুললেন কিশোর দত্ত৷ 

সিবিআই কে দিয়ে তদন্ত প্রসঙ্গে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, একজন অভিযুক্ত হয়ে নির্দিষ্ট তদন্তকারী সংস্থার কথা বলা যায় না৷ যুক্তি সাপেক্ষে সুপ্রিমকোর্টের একাধিক মামলার রায়ও তুলে ধরে বলেন কেন অভিযুক্ত নিজের পছন্দের তদন্তকারী সংস্থা নিয়োগের আবেদন করতে পারেন না। কিন্তু কেন অভিযুক্ত ব্যক্তি নিজের পছন্দ অনুযায়ী তদন্তকারী সংস্থা বেছে নিতে পারবেন না? অ্যাডভোকেট দেনারেলকে পাল্টা প্রশ্ন করেন বিচারপতি।

শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী পরমজিৎ সিং পাটুয়ালিয়া বলেন, আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ রাজনৈতিক ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। কারণ মামলাগুলি হয়েছে তিনি একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পরেই। তাঁর বিরুদ্ধে একের পর মামলা দায়ের করা হচ্ছে, যার কোন সারবত্তা নেই। এদিকে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ২০০৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত থাকাকালীন কোনও অভিযোগ ছিল না। কিন্তু যেদিন থেকে বিজেপি’তে যোগদান করেছি, সেদিন থেকে একের পর এক রাজ্যের বিভিন্ন থানায় অভিযোগ দায়ের করা হচ্ছে আমার বিরুদ্ধে। প্রসঙ্গত, বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল সুপ্রিমোকে পরাজিত করে বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা নির্বাচিত হয়েছেন শুভেন্দু। তাঁর আইনজীবী আরও বলেন, মুকুল রায় বিজেপিতে যোগদানের পর তাঁর বিরুদ্ধে ১৬৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে যাওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে আর অভিযোগ উঠেছে না।

অভিযোগ, একই ভাবে শুভেন্দু অধিকারীকেও একের পর এক ভুয়ো মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। যে মামলাগুলোর সঙ্গে শুভেন্দুর কোনও সম্পর্ক নেই। এই এজলাসেই মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে অনেক মামলার শুনানি হয়েছে। অধিকাংশ মামলায় মুকুল রায়ের পক্ষে রায় দিয়েছে সিঙ্গেল বেঞ্চ। মুকুল রায়ের সঙ্গে যে ব্যবহার রাজ্য সরকার করেছিল, ঠিক সেই ব্যবহার করা হচ্ছে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে৷ 

উল্লেখ্য, চাকুরি দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে৷ এদিন তাঁর আইনজীবী বলেন, যে দফতরে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, সেই দফতরের সঙ্গে শুভেন্দুর কোনও সম্পর্ক ছিল না। রাখাল বেরা ও চঞ্চল নন্দী নামে দু’জনকে গ্রেফতার করার পর শুভেন্দু অধিকারীর নাম পায় পুলিশ।

আরও পড়ুন- প্রসঙ্গ রায়ে সাহেব: এবার দিদির কথা দিলীপের মুখে!

এদিন শুভেন্দুর আইনজীবী পাটুরিয়াকে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, পুলিশ যদি কোনও অভিযোগ না পান, তাহলে কেন শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবেন? বৃহস্পতিবার দুপুর ২ টোয় মামলার পরবর্তী শুনানি হবে বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার এজলাসে।
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *