হাওড়া: তাঁর হাত ধরেই ভোটের আগে রাজ্যের শাসকদলের সবচেয়ে বড়ো ফাটলটা চোখে পড়েছিল৷ আজ হাওড়ায় দলত্যাগী তৃণমূল নেতাদের মহা যোগদান সভার মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের বিরুদ্ধে আরও সুর চড়ালেন নন্দীগ্রামের নেতা শুভেন্দু অধিকারী। গেরুয়া শিবিরে যোগদানের পর থেকেই পুরোনো দলের বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন তিনি। পুরোনো ‘সতীর্থ’দের পাশে পেয়ে শুভেন্দু অধিকারীর সেই সুরই আরও জোরদার হল।
তৃণমূল কংগ্রেস থেকে গত কয়েক মাস ধরেই একের পর এক নেতার দলত্যাগের ঘটনা সামনে আসছে। রাজ্যে শাসকদলের ভিত যে ক্রমশ নড়বড়ে হচ্ছে তা প্রকাশ্যে আসছে বারবার। সেই আবহেই এদিন হাওড়ার সভা থেকে শুভেন্দু অধিকারীর হুঁশিয়ারি, “আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কলকাতা আর দক্ষিণ ২৪ পরগনা আমরা ফাঁকা করব।” শুধু তাই নয়, তৃণমূল কংগ্রেসে ‘কোম্পানি’ চালানোর মতোও আরও লোক থাকবে না, বলেন তিনি। শাসকদলের প্রতি তাঁর এই তীব্র হুংকার নিঃসন্দেহে ভোট পূর্ববর্তী বঙ্গ রাজনীতির পারদ চড়িয়েছে কয়েকগুণ।
হাওড়ার ডুমুরজোলার সভায় এদিন গেরুয়া পতাকা হাতে তুলে নেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, বৈশালী ডালমিয়া, রথীন চক্রবর্তী সহ তৃণমূলের একাধিক নেতৃত্ব। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগদান প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী জানান, এতে একটি বৃত্ত সম্পূর্ণ হল। তিনি বলেন, “রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ২০০৪ সাল থেকে আমি একসাথে লড়াই শুরু করেছিলাম। মানসিকভাবে আমরা এক জায়গাতেই ছিলাম। একসঙ্গে আমরা উন্নয়নের শপথ নিয়েছিলাম। আজ একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ হল।”
বিজেপিতে যোগদানকারী শাসকদলের অন্যান্য নেতাদের কথাও শোনা যায় শুভেন্দু অধিকারীর গলায়। বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ বাণী সিংহ রায়ের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র রথীন চক্রবর্তী সম্বন্ধে তিনি বলেন, ‘ওঁকে গোটা রাজ্যের মানুষ শ্রদ্ধা করেন।’ প্রশংসা শোনা যায় প্রবীর ঘোষাল সম্বন্ধেও। নবাগত নেতাদের বিজেপিতে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি এদিন ভোটের আগে চালু করা মুখ্যমন্ত্রীর নতুন প্রকল্পগুলিকেও ব্যঙ্গ করতে ভোলেননি শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর কথায়, স্বাস্থ্য সাথী কার্ড আসলে ‘ভোট সাথী’ কার্ড। বিজেপি ক্ষমতায় এলে সারা বাংলায় ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্প চালু করার বার্তাও দিয়েছেন তিনি।