‘বিয়ে হবে কিনা ভবিষ্যৎ বলবে, মৃত্যু ছাড়া আমার আর শোভনের বিচ্ছেদ সম্ভব নয়’

‘বিয়ে হবে কিনা ভবিষ্যৎ বলবে, মৃত্যু ছাড়া আমার আর শোভনের বিচ্ছেদ সম্ভব নয়’

কলকাতা:  দীর্ঘ ১৭ বছরের দাম্পত্যে ইতি টেনে মনোজিৎ মণ্ডলের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের পথে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কেন দীর্ঘ দাম্পত্যে ইতি পড়ছে? তবে কি শোভনের সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়তেই এই সিদ্ধান্ত? নানা প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে অনেকের মনেই৷ স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ থেকে শোভনের সঙ্গে সম্পর্ক… নানা প্রশ্নের জবাব দিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী৷ 

আরও পড়ুন- পদ হারিয়ে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ার বার্তা দিলেন দিলীপ? তুঙ্গে জল্পনা!

এদিন একটি সাক্ষাৎকারে বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে বৈশাখী বলেন, ‘আমি সম্পর্ককে দখলদারির পরিসর বলে কখনও মনে করিনি৷ সম্পর্কের তার কেটে গিয়েছে৷ অত্যন্ত তিক্ততা চলে আসছিল৷ সম্প্রতি এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে যা শিক্ষিত মননে প্রভাব ফেলছিল৷ আমার সন্তানের উপর প্রভাব পড়তে পারত৷ সে কারণেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার কথা ভেবেছি৷’  বৈশাখী আরও অভিযোগ, ‘মনোজিতের জীবনে একজন নারী এসেছেন৷ মনোজিতের বাড়িতে তাঁর যাতায়াত রয়েছে৷ একসঙ্গে তাঁরা ঘুরতে যাচ্ছেন৷ এর পরেই মনে হয়েছে ফরমাল সম্পর্ক থেকে মনোজিৎকে মুক্ত করে দেওয়ার৷ আমি চাই মনোজিৎ নতুন করে সম্পর্ক তৈরি করুন৷’    

এ প্রসঙ্গে  মনোজিৎবাবু বলেন, ‘বৈশাখী যে আমার সঙ্গে গত ৩ বছর ধরে নেই সেটা তো সকলেই জানে৷ লিখিত ভাবে উনি জানিয়ে দিয়েছিলেন, আমরা স্বেচ্ছায় আলাদা হচ্ছি৷ আমাদের কারও প্রতি কোনও দায়বদ্ধতা নেই৷ তাহলে ছাড়ার প্রশ্নটা কোথায়? এবার আমি কী করব তা নিয়ে উনি মন্তব্য করতে পারবেন না৷ তাছাড়া আমার চিকিৎসার জন্য কেউ পাশে থাকলে সেটাকে ঘুরতে যাওয়া বললেও কিছু করার নেই৷

তবে বৈশাখীর বক্তব্য, শোভনের সঙ্গে সম্পর্কের শুরু থেকেই মনোজিৎকে সবটা পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি৷ প্রসঙ্গত, মনোজিৎ ও বৈশাখীর একটি ৮ বছরের সন্তান রয়েছে৷ মনোজিতবাবু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক৷ বৈশাখী বলেন, আমরা দীর্ঘদিন আলাদা৷ মনোজিৎ অসুস্থ৷ ওঁর সঙ্গে একজনের থাকা দরকার৷ সেকারণেই আমার নাম থেকে ওঁকে মুক্ত করে দিতে চাই৷ ১৪ বছর ওঁর সঙ্গে সংসার করেছি৷ বাঁধন আলগা না হলে শোভন সেখানে ঢুকতে পারত না৷ আমাদের সম্পর্ক মজবুত থাকলে শোভনের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হতই না৷ 

বৈশাখী আরও বলেন, যে যন্ত্রনা সমাজের কাছে অব্যাক্ত থেকেছে, শোভন সেই দুঃখের জায়গায় প্রলেপ লাগিয়েছিল৷ শোভন যে ভাবে পাশে দাঁড়িয়েছে, তাতে আমার আর শোভনের মানসিক নির্ভরতার জায়গা তৈরি হয়েছে৷ দু’জনের প্রতি আমাদের সম্মান রয়েছে৷ মৃত্যু ছাড়া শোভন আর আমার বিচ্ছেদ সম্ভব নয়৷ 

আরও পড়ুন- দায়িত্ব নিয়েই মমতার পাড়ায় রাজ্য BJP সভাপতি, প্রচারে বাধা পুলিশের

শোভনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক অনেক বেশি সফল বলেও জানান বৈশাখী৷ তাই শোভনকে ১০ এ ১০০ নম্বর দিলেন তিনি৷ তাঁর কথায়, মেয়েরা যেমন পুরুষের স্বপ্ন দেখে শোভন একেবারে সেই রকম৷ তবে মনোজিৎ ভালো মানুষ বলেও উল্লেখ করেন বৈশখী৷ তবে তাঁকে নম্বর দেওয়ার জায়গায় তিনি আর নেই বলেও উল্লেখ করেন৷ 

 কিন্তু শোভনবাবুকে কি কোনও দিন বিয়ে করবেন তিনি? বৈশাখী জানান, তাঁদের মধ্যে গভীর কমিটমেন্ট রয়েছে৷ এই কমিটমেন্টের নাম বিয়ে, লিভইন, প্রেম বা বন্ধুত্ব, এই ভাবে তাঁরা সম্পর্ককে দেখেন না৷ তবে তাঁরা যে একে অপরের পরিপূরক সে কথা জোড় গলায় বললেন বৈশাখী৷ তিনি বলেন, বিয়ে একটা নিরাপত্তার কথা বলে৷ কিন্তু শোভনের কাছে আমি ভীষণ নিরাদপ৷ বিয়ে হবে কিনা, সেটা ভবিষ্যৎ বলবে৷ তবে আমাদের সম্পর্কে কোনও সুরক্ষাহীনতা নেই৷ আমাদের সম্পর্কটাই একটা সুন্দর স্বপ্নের মতো৷ এমন কোনও মুহূর্ত নেই, যখন আমরা একে অপরকে কাছে পাইনি৷ 
    

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *