‘বিজেপির জন্য শোভন চ্যাপ্টার শেষ’! ব্যক্তি-সম্পর্কই কি কাল হল?

‘বিজেপির জন্য শোভন চ্যাপ্টার শেষ’! ব্যক্তি-সম্পর্কই কি কাল হল?

 

কলকাতা: বিজেপির জন্য শোভন চট্টোপাধ্যায় ‘over and out’ । দ্বিতীয়বার দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। এর আগেও যোগ্য মর্যাদার প্রসঙ্গ তুলে দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন। যদিও মিটমাট হয়েছিল। শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হবেন তা স্থির ছিল। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত হয় হয়নি। শোভনকে প্রার্থী করলেও নিজের কেন্দ্র বেহালা পূর্বে রাখা হয়নি। ওই কেন্দ্রে শোভনের স্ত্রী তৃণমূল প্রার্থী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে লড়াই করবেন বিজেপির তারকা প্রার্থী পায়েল সরকার। অন্যদিকে, বৈশাখীর কপালে এখনও পর্যন্ত দলের টিকিট জোটেনি। এর পরেই আলাদা আলাদা ভাবে দুজনেই পদ ছাড়েন। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে পদত্যাগ পত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বিজেপি সূত্রে খবর, এইসব কিছুতে ব্যাপক বিরক্ত দল। চল্লিশ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তার রাজনীতির সামনে ব্যক্তিগত সম্পর্ক কে রেখে দলকে চাপ দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিজেপি তাকে অনেক কিছুই দিয়েছিল। এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাকে মেয়র এবং মন্ত্রী বানিয়েছিলেন। বিজেপিতে শোভন চট্টোপাধ্যায় যা চেয়েছিলেন তা পেয়েছিলেন। রাজ্য বিজেপি তাকে যোগ্য সম্মান দিয়ে কাজের সুযোগ করে দিয়েছে। রাজ্য কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন শোভন। এই পরিস্থিতিতে আর পিছিয়ে যাওয়ার জায়গা ছিল না শোভনের। মঙ্গলবার বিজেপির রাজ্য কমিটির তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। ওই তালিকায় ১১০ জনের মধ্যে একজন শোভন। আবার দলকে পাল্টা কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার পালা। কথা ছিল বিধানসভা নির্বাচনে তা তিনি ফিরিয়ে দেবেন। কিন্তু নিজের কেন্দ্র থেকে প্রার্থী না হওয়া এবং বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রার্থী না করার জন্য দল ছেড়েছেন তিনি। পার্টি সূত্রে খবর, বেহালা পূর্ব কেন্দ্রে শোভনের জেতার সম্ভাবনা দেখা যায়নি। দীর্ঘদিন এলাকায় না যাওয়ার ফলে সাধারণ মানুষের থেকে তিনি বিচ্ছিন্ন তা বিজেপিও দেখেছে। শোভনের থেকে একজন তারকা প্রার্থীরাই সুযোগ বেশি রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

২০১৯ এর ১৪ অগাস্ট তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে এসেছিলেন শোভন। তারপর থেকে বিজেপিতে নানা উঠাপড়ার মধ্যেই টিকে রয়েছেন তিনি। কিন্তু, ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে অনেকেই তাকে দলের সামনের সারিতে দেখতে চেয়েছিলেন। দলে থেকেও শোভন চট্টোপাধ্যায়ের মত অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ কেন পিছনের সারিতে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। একটি প্রশ্ন বারবার উঠে আসছে। গত এক বছর বিজেপিতে থেকে নিজের রাজনৈতিক জীবনে কী উন্নতি করলেন শোভন? বিজেপিতে তিনি কেন এসেছিলেন। তৃণমূলেই যদি তাকে ফিরে যেতে হয় তবে তিনি ওই দল ছেড়েছিলেন কেন? এখন তাই প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে এত অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এক রাজনীতিকের জীবন কি শুধু কোনও ব্যক্তিগত সম্পর্ক রক্ষা করতেই শেষ হয়ে যাবে? এক পার্টি সূত্র তাই বলছেন – ‘বিজেপির জন্য শোভন চ্যাপ্টার শেষ।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *