নিজস্ব প্রতিনিধি, ব্যারাকপুর: অসুস্থ হওয়ার পর দলের বেশ কিছু নেতাদের থেকে ঋণ নিয়েছিলেন ব্যারাকপুরের তৃণমূল বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত৷ এবার সেই এক এক করে সেই ঋণ মেটাতে শুরু করেছেন তিনি৷ তৃণমূল দলের কোনো নেতার ঋণ আর বাকি রাখবেন না ব্যারাকপুরের বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত৷ আর এর প্রথম ধাপ হিসেবে, ব্যারাকপুরের তৃণমূল নেতা উত্তম দাসের দু লক্ষ টাকা পরিশোধ করলেন তিনি । তাহলে কী দল ছাড়তে চলেছেন শীলভদ্র দত্ত? উনিশ তারিখে কী নতুন চমক দেবেন তিনি৷ এপ্রসঙ্গে ব্যারাকপুরের বিধায়ক জানিয়েছেন, ‘উনিশ তারিখ এলেই দল ছাড়ি কিনা দেখা যাবে’৷
কড়ায় গণ্ডায় দলের নেতাদের থেকে নেওয়া সব টাকা মিটিয়ে দিতে চাইছেন শীলভদ্র দত্ত৷ বর্তমানে দলে তার যা অবস্থান তাতে শীলভদ্রের এই কার্যকলাপে বিতর্কের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ বৃহস্পতিবার সারাদিন ধরে জিতেন্দ্র তেওয়ারি সহ তৃণমূলের একের পর এক নেতা ও বিধায়ক পদত্যাগ করেছেন৷ এবার কী তাহলে সেই পথেই হাঁটবেন বর্ষীয়ান এই বিধায়কও? তৃণমূলের থেকেই দলের বিরুদ্ধে তিনি বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন অনেকদিন আগে থেকেই৷ তার মানভঞ্জনে তার বাড়িতে গিয়েছে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের দল৷ তবে তাতে হিতে বিপরীত হয়৷ যা বুঝতে পেরে শীলভদ্রের কাছে ছোটেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক৷ অন্যদিকে মুকুল রায়ের সঙ্গে তার হৃদ্যতা এখনও বজায় আছে আগের মতই৷ যা জল্পনার আগুনে আরও ঘি ঢেলেছে৷
ইতিমধ্যে ব্যারাকপুরের পুর প্রশাসক উত্তম দাসকে তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন ২ লক্ষ টাকা। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিককেও টাকা ফেরনোর চেষ্টা করছেন তিনি। তবে তিনি তা নিতে অস্বীকার করেছেন। জানা গিয়েছে, এদিন বারাকপুরের চেয়ারম্যান উত্তম দাসের কাছে প্রথমে দু লক্ষ টাকার চেক পাঠালে তিনি ফেরত দিয়ে বলেন ক্যাশ টাকা নিতে চান ৷ এরপর বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত নিজে টাকা তুলে নগদ টাকা উত্তম দাসের কাছে পাঠিয়ে দেন । বাকি পাওনাদারদের মধ্যে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, পার্থ ভৌমিক, নারায়ণ গোস্বামী দের মত তৃণমূল নেতা রয়েছে । ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে বিপুল টাকা খরচ করে লিভার প্রতিস্থাপন করান ব্যারাকপুরের বিধায়ক। এতটাই বেশি খরচ হয়েছিল যে সে সময় তাঁর ঘনিষ্ঠ একাধিক তৃণমূল নেতার কাছ থেকে তিনি মোট ১২ লক্ষ টাকা ধার নিয়েছিলেন। এবার সেই ঋণই শোধ করতে শুরু করেছেন তিনি।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে হঠাৎ এখন কেন? তিনি যে তৃণমূলের টিকিটে ভোটে দাঁড়াবেন না৷ তা আগেই ঘোষণা করেছিলেন তিনি৷ তাহলে কি ভোটের আগে এবার ঋণের বোঝা মিটিয়ে একেবারে ঝাড়া হাত পা হতে চান শীলভদ্র? উঠছে প্রশ্ন৷