কলকাতা: বিগত ছয় দফায় যে ভোট হয়েছে বাংলায় তার থেকে সপ্তম দফার নির্বাচনে অনেক বেশি ‘সুরক্ষিত’ হয়েছে বললে ভুল হবে না। বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা ঘটেছে ঠিকই, কিন্তু আগের দফা গুলির মত বড় কোনো ঘটনা আজকের দফায় ঘটেনি। গুলি চালানো থেকে শুরু করে, বোমাবাজির মতো বড় ধরনের ঘটনার সাক্ষী আজ হতে হয়নি বাংলাকে। যদিও কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আজকেও উঠেছে। অন্যদিকে মালদা ও মুর্শিদাবাদের মত জায়গাতেও কোন হিংসার ঘটনা নেই। কলকাতা থেকে ৩৫ ও মুর্শিদাবাদ থেকে ২২ টি বোমা উদ্ধার করা হয়েছে।
বড় ঘটনা না ঘটলেও সপ্তম দফার নির্বাচন যে একেবারে শান্তিপূর্ণ হয়েছে তা কখনই বলা সম্ভব হবে না। কারণ বাড়ি ভাঙচুর থেকে শুরু করে তৃণমূল এবং বিজেপি সংঘর্ষের মত বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে অবশ্যই। কোথাও তৃণমূল নেতার বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে, অন্যদিকে শুধুমাত্র তৃণমূল সমর্থক বলে মারধরের অভিযোগ উঠেছে সেই কেন্দ্রের বাহিনীর বিরুদ্ধেই। এদিকে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে এ দিনেও। আবার তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সঙ্গে বচসা জড়িয়েছেন পুলিশ অধিকর্তা। সেই নিয়ে আলাদাভাবে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অন্যদিকে বিক্ষিপ্তভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন রাসবিহারী তৃণমূল প্রার্থী দেবাশীষ কুমার, জামুড়িয়ার সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত সিপিআইএম প্রার্থী ঐশী ঘোষ সহ আরো অনেকে।
এদিকে, সপ্তম দফার নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে এমনটাই জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আজ কলকাতায় মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব এ কথা জানান। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ভোটের হার পাঁচ জেলায় ৭৫.০৫ শতাংশ। এই দফায় বিশেষ কোন হিংসার ঘটনা নেই বলে জানিয়েছে কমিশন। হিংসা ছড়ানোর আশঙ্কায় আগে থেকেই ৭৪২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়াও ১৪৪ ধারা ভঙ্গের জন্য ১১ জন ও অন্যান্য নির্দিষ্ট কেসের ভিত্তিতে ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানান হয়েছে। অন্যদিকে গননার ক্ষেত্রে কোভিড প্রটোকলের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল এ বিষয়ে আবারও ডি এম ও এসপিদের সঙ্গে বৈঠক হবে বলে জানান আরিজ আফতাব। তবে কাউন্টিং হল ডবল করা হবে। এবছর ৭০৫ টি কাউন্টিং হল করা হল। পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখার ওপর জোর দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, আজ বিকেল ৫ টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৭৫.০৫ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে মুর্শিদাবাদ জেলায়, ৮০.৩০ শতাংশ। সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে দক্ষিণ কলকাতায়, ৫৯.৯১ শতাংশ! কলকাতা দক্ষিণ কেন্দ্রের বালিগঞ্জে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত ভোট ৫৯.৫৯ শতাংশ। ভবানীপুর কেন্দ্রে ৬০.০১ শতাংশ। কলকাতা বন্দর কেন্দ্রে ৬৪.০৯ শতাংশ এবং রাসবিহারীতে ভোট পড়েছে ৫৫.৯৩ শতাংশ। এদিকে দক্ষিণ দিনাজপুরে ভোট পড়েছে ৮০.২১ শতাংশ, মালদহ ভোট পড়েছে ৭৮.৭৬ শতাংশ এবং পশ্চিম বর্ধমানের ভোট পড়েছে ৭০.৩৪ শতাংশ।