তফশিলিদের জন্য পৃথক কমিটি, ভোটের আগে বড় চমক মমতার

তফশিলিদের জন্য পৃথক কমিটি, ভোটের আগে বড় চমক মমতার

 

কলকাতা: সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। দলের জন্য বাংলার পিছিয়ে পড়া জাতির ভোটব্যাঙ্ক অটুট রাখতে মাস্টার স্ট্রোক খেলল তৃণমূল কংগ্রেস। তফশিলি জাতি, উপজাতি ও অন্যান্য পিছিয়ে পড়া জাতির জন্য পৃথক কমিটি গঠন করল রাজ্যের শাসক দল। প্রথমবারের জন্য লিখিতভাবে কমিটির সদস্যদের নামও ঘোষণা করল দল।

আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির কাছে পাখির চোখ বাংলা। গেরুয়া শিবিরের কাছে বাংলা দখল হয় এবার, নয়তো কখনও নয়। তাই বাংলার শক্ত মাটি আঁকড়ে ধরার জন্য ছকের প্রতিটা ঘুঁটি খুব সাবধানে হিসেব কষে সাজাচ্ছে কেন্দ্রের শাসক দল। কিন্তু অত সহজে বাংলার মসনদ ছেড়ে দেওয়ার মতো দল তৃণমূল কংগ্রেসও নয়। একের পর এক পাল্টা চাল দিচ্ছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কখনও নিজেকে নন্দীগ্রামে ভোটপ্রার্থী হিসেবে দাঁড় করানো, কখনও ‘স্বাস্থ্য সাথী’ ও ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি। এবার তৃণমূল সুপ্রিমো নজর দিয়েছেন দলের তফশিলি ভোটব্যাঙ্কের দিকে।

বাংলার হিন্দু ভোট পুরোটাই নিজের দিকে টানতে চাইছে বিজেপি। কিন্তু তৃণমূলও সেই ভোটব্যাঙ্ক ভাঙতে তৈরি‌। সেই উদ্দেশ্যেই এবার তফশিলি জাতি, উপজাতি ও অন্যান্য পিছিয়ে পড়া জাতির জন্য পৃথক কমিটি গঠন করা হল। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পিছিয়ে পড়া জাতির নেতাদেরই এই কমিটিগুলির শীর্ষপদ দেওয়া হয়েছে। লক্ষ্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ আরও বাড়ানো। প্রথমবারের জন্য লিখিতভাবে প্রকাশিত হয়েছে কমিটির সদস্যদের নামও।

তফশিলি জাতির কমিটির সভাপতি পদে রয়েছেন ড. তাপস মণ্ডল, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে রয়েছেন প্রতিমা মণ্ডল, অসিত কুমার মণ্ডল, নবীন চন্দ্র বাগ। কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন স্বপন বাউড়ি, ছায়া দলুই, মনোদেব সিনহা প্রমুখ। তফশিলি উপজাতি শীর্ষস্থানে রয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের দেবু টুডু। অন্যান্য পদে রয়েছেন পরেশ মুর্মূ, জেমস কুজুর, জোসেফ মুণ্ডা, সুকুমার মাহাতো প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, নির্বাচনে তফশিলি জাতি-উপজাতির জন্য ৮৪টি আসন সংরক্ষিত। তার মধ্যে ৪৬টি আসনে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল পেয়েছিল ২২টি আসন। ২০১৪ সালে সেই সংখ্যাটা ছিল ৩৪। অন্যদিকে, বিজেপির আসন ২ থেকে ১৮ হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের দাবি, পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর ভোটেই ফারাক গড়ে দিয়েছে বিজেপি। বাংলার অন্যতম দল হয়ে উঠেছে। এবারেও সমাজের সবরকম শ্রেণীর কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির হয়ে পিছিয়ে পড়া জাতিকে নিয়ে কাজ করে আরএসএস। তাই তৃণমূলের এই মাস্টার স্ট্রোক নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 + three =