কলকাতা: একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলবদল বঙ্গ রাজনীতিতে এক আলাদা তাৎপর্য নিয়ে সামনে এসেছে। শাসকদলের একাধিক হেভিওয়েট নেতা অবলীলায় যোগ দিয়েছেন গেরুয়া শিবিরে, আবার বিজেপি থেকে তৃণমূলেও এসেছেন কেউ কেউ। দলবদলের এই মেঘ কি এবার পৌঁছে গেল পাহাড়েও? সাম্প্রতিক ঘটনা যেন তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
উত্তরবঙ্গের পাহাড়ে রাজনৈতিক মহলের বড় নাম বিমল গুরুং। একসময় তৃণমূল বিরোধিতা করলেও আগামী নির্বাচনের আগে হঠাৎই তাঁকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে সুর চড়াতে দেখা গেছে। আর তার জেরেই এবার দলের অন্যতম নির্ভরযোগ্য সদস্যের পদত্যাগের সাক্ষী রইলেন তিনি। পাহাড়ে বিমল গুরুংয়ের ডান হাত তথা গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার মুখ্য কো–অর্ডিনেটর তিলক চন্দ্র রোকা দলের সমস্ত পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন, এমনটাই জানা গেছে সূত্রের খবরে। তিলক বাবুর পদত্যাগ পাহাড়ি রাজনীতিতে ফের চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন দল থেকে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়ার যে হিরিক দেখা দিয়েছে, তাতে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার অন্যতম শীর্ষ নেতা তিলক চন্দ্র রোকার বিজেপিতে যোগ দান নিয়েও তৈরি হয়েছে জল্পনা। উল্লেখ্য, সপ্তাহ খানেক আগেই গুরুং শিবিরের বেশ কয়েকজন পদ্ম শিবিরে নাম লিখিয়েছেন। তারপরেই তিলক বাবুর এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে বিমল গুরুংয়ের কপালে।
তিলক চন্দ্র রোকা ছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। শুধু তাই নয়, ২০০৭ সালে দলের জন্মলগ্ন থেকেই তিনি ছিলেন বিমল গুরুংয়ের পাশে। ভোটের আগে কেন হঠাৎ পদত্যাগ করলেন তিনি? সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিলক বাবু জানান, “মানুষের কাছে আমি তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে ভোট চাইতে যাব কীভাবে? আমরা পৃথক গোর্খাল্যান্ড দাবি করেছিলাম বলে তৃণমূল সরকার ৪ বছর আগে পাহাড়ের মানুষকে আক্রমণ করেছিল। আমার বিরুদ্ধে ১৪৯টা মামলা করেছে।” অর্থাৎ বিমল গুরুংয়ের সাম্প্রতিক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঝোঁকই যে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার অন্দরে অসন্তোষের মূল কারণ তা স্পষ্ট করেছেন তিলক বাবু নিজেই। উল্লেখ্য, গত ১২ জানুয়ারি গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ছেড়ে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দিয়েছেন বিমল গুরুংয়ের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা স্বরাজ থাপা, প্রাক্তন মুখপাত্র বিপি বাজগেইন, সাওয়ান রাই, এলএম থাপা-সহ আরো অনেকে।