করোনা মোকাবিলায় স্কুলগুলিতে সেফ হোমের সিদ্ধান্ত! পদক্ষেপ রাজ্যের

করোনা মোকাবিলায় স্কুলগুলিতে সেফ হোমের সিদ্ধান্ত! পদক্ষেপ রাজ্যের

কলকাতা: করোনা মোকাবিলায় এবার রাজ্যের সরকারি এবং সরকারি নিয়ন্ত্রিত স্কুলগুলোতেও সেফহোম করার পরিকল্পনা রাজ্য সরকারের। সোমবারই জেলাশাসকদের সতর্ক করে স্কুল শিক্ষা কমিশনার অনিন্দ্য নারায়ণ বিশ্বাস চিঠি দিয়েছে বলেই স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর। চিঠিতে প্রাথমিকভাবে স্কুলগুলিতে স্যানিটাইজ ও পরিষ্কার করে রাখতে বলা হয়েছে। শুধু তাই নয় প্রয়োজন পড়লে জেলা প্রশাসন স্কুলগুলিকে সেফ হোম হিসেবেও ব্যবহার করতে পারে বলেও জানানো হয়েছে চিঠিতে বলেই দফতর সূত্রে খবর। গরমের ছুটি ও করোনা পরিস্থিতির কারণে আপাতত রাজ্যজুড়ে স্কুল বন্ধ রয়েছে। স্কুল গুলিকে সেফহোম হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে বলেই দপ্তরের তরফে চিঠি জেলাশাসকদের বলেই মনে করা হচ্ছে।

তবে স্কুল গুলিকে সেফহোম হিসেবে ব্যবহার করা হলেও কোন স্কুলে এসে তা করা হবে তা সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনই ঠিক করবে বলেই স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর। কারণ সব স্কুলে সমান পরিকাঠামো নেই। ফলস্বরূপ স্কুলগুলি পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্ট জেলা শাসকদের রিপোর্ট দেবেন জেলার স্কুল শিক্ষা দফতরের আধিকারিকরা। তারপরই কোন স্কুলগুলিকে সেফহোম হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে। তবে আপাতত জরুরিকালীন ভিত্তিতে স্কুলগুলি ফাঁকা করতে বলা হয়েছে। অর্থাৎ বেঞ্চ থেকে শুরু করে যাবতীয় জিনিস ফাঁকা করতে বলে দেওয়া হয়েছে বলেই দফতর সূত্রে খবর। সূত্রের খবর কোন স্কুল গুলিকে সেফ হোম হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে তা নিয়ে একটি রিপোর্ট স্কুল শিক্ষা দফতরের পাঠানোর কথা বলা হয়েছে জেলা শাসকদের বলে জানা গিয়েছে।

এদিকে, স্কুল গুলিকে সেফহোম হিসেবে ব্যবহার করার কথা বললেও রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির বা কলেজ গুলিকে এর আওতায় আনা হবে নাকি সে বিষয়ে অবশ্য এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি বলেই দফতর সূত্রে খবর। যদিও ইতিমধ্যেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় তরফ সে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলকে সেফহোম হিসেবে ব্যবহার করার জন্য। পাশাপাশি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ গোয়েঙ্কা হাসপাতালকেও ইতিমধ্যেই কোভিড কেয়ার সেন্টার হিসেবে গড়ে তুলছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। তবে রাজ্যের এই সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন শিক্ষক সংগঠনের সদস্যরা। স্বাগত জানাচ্ছেন বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকরাও। সে ক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য যাবতীয় প্রস্তুতি যেন রাজ্য সরকারই নেয়। 

সেফ হোম বিষয়ে শিক্ষক সংগঠন ” অল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার এ্যাসোশিয়েশনের” সভাপতি  রথীন সাঁইয়ের মতে, “করোনার অতিমারিতে স্কুলগুলিতে সেফ হোম করার সরকারী সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি। তবে মিড ডে মিল সহ আনুসাঙ্গিক কাজকর্ম স্কুলগুলিতে চলায় ডিগ্রি, বিএড , ডিএড, পলিটেকনিক কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় , কিষান মান্ডি, কমিউনিটি হল, অব্যবহৃত প্রশাসনিক ভবন আগে অধিগ্রহণ করা দরকার ছিল। মিড ডে মিল বিতরণ, স্কলারশিপ, বিভিন্ন পরীক্ষা সহ অন্যান্য কাজকর্ম করার জন্য বেশীরভাগ স্কুলগুলিতেই পৃথক ভবন ও অফিস নেই। এছাড়াও স্কুলগুলিতে সেফ হোম করার জন্য পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতা ও স্যানিটাইজেশন সহ ইলেকট্রিক বিল পেমেন্ট যেন সরকারীভাবে ব্যবস্থা করা হয়। স্কুলগুলিতে মিড ডে মিল বিতরণ ও সেফ হোম একসাথে সম্ভব হবে না, এতে সংক্রমণ অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × 3 =