গোত্র নয়, রক্ত পরীক্ষার পর হোক বিয়ে, বাড়ি বাড়ি প্রচার শিক্ষকের

গোত্র নয়, রক্ত পরীক্ষার পর হোক বিয়ে, বাড়ি বাড়ি প্রচার শিক্ষকের

ঝাড়গ্রাম: শারীরিক সৌন্দর্য্য, আর্থিক স্বচ্ছলতা কিংবা গোত্রের মিল, এসব নয়, এবার বিবাহের মাপকাঠি হোক থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষার মাধ্যমে। সাধারণ মানুষের মধ্যে এই সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে সাইকেলে করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে সচেতন করছেন এক স্কুল শিক্ষক। স্কুল ছুটির পর কিংবা ছুটির দিনে ঝাড়গ্ৰাম জেলার গোপীবল্লভপুর ২ নম্বর ব্লকের বেলিয়াবেড়ার কৃষ্ণ চন্দ্র মেমোরিয়াল উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক সুব্রত মহাপাত্র নিজেকে ব্যস্ত রাখেন এই সামাজিক সচেতনতার কাজে৷

তাঁর এই মহতী কাজে তার সঙ্গ দেন স্কুলের কিছু ছাত্র। বিয়ের আগে থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা করানোর গুরুত্ব প্রচারে যে সুব্রতবাবু শুধুমাত্র মৌখিক উপায়ে সারছেন এমনটা নয়, এই কাজের জন্য তিনি নিজের পকেট থেকে খরচ করে পাঁচ হাজার পোষ্টারও ছাপিয়েছেন৷ কিন্তু তার এই মহৎ উদ্যোগের পিছনে কি কোনও কারণ লুকিয়ে রয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তর নিজেই দিয়েছেন এই স্কুল শিক্ষক।

সুব্রত বাবু জানিয়েছেন, “থ্যালাসেমিয়া রোগের কারণে আমি আমার প্রিয় সন্তানকে হারিয়েছি। আর এই রোগ যাতে আর কোনো কোল খালি না করতে পারে, তাই এই সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়া৷” আর তাই সমাজকে থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে অবগত করতেই সপ্তাহে তিনদিন কইমা, ভাদুয়া, মুচিনালা, শাকরারী, ভান্ডারডিহা, নারানপুর, মহাপাল, তপশিয়া এলাকায় বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন স্কুল শিক্ষক সুব্রত মহাপাত্র।

সুব্রত বাবুর এই উদ্যোগকে বিশেষভাবে স্বাগত জানিয়ে গোপীবল্লভপুর ২ নম্বর ব্লকে এর সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক অর্ঘ্য ঘোষ জানান, “থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষার গুরুত্ব ও প্রয়োজনয়ীতা সম্বন্ধে গ্রামীন এলাকার অনেকেই সচেতন নন। তাঁর এই উদ্যোগে অনেকের আগামী দিনগুলি সুচারু হয়ে উঠবে৷” পাশাপাশি শিক্ষকের এই উদ্যোগে অনুপ্রাণিত হয়ে তাঁরই এক ছাত্র জানিয়েছে, “স্যারের এই উদ্যোগকে আমরা ভবিষ্যতে এগিয়ে নিয়ে যাবো, এই শপথ গ্রহণ করছি৷” উল্লেখ্য, শিক্ষক সুব্রত মহাপত্রের উদ্যোগেই তার স্কুলে প্রতি বছর থ্যালাসেমিয়া সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা হয়। যদিও গতবছর করোনা অতিমারীর কারণে এই শিবির স্থগিত রাখতে হয়েছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *