কলকাতা: বৃহস্পতিবার ভবানীপুরের বাসিন্দা এক ওষুধ ব্যবসায়ীর শরীরে পাওয়া যায় করোনা ভাইরাস। ওই ব্যক্তি মেহতা বিল্ডিং-এর ওষুধ ব্যবসায়ী। জ্বর আসার আগে পর্যন্ত তিনি রীতিমতো বসেছেন তাঁর ওষুধের দোকানে, এমনই দাবি অন্য ব্যবসায়ীদের। এরপরই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে মেহতা বিল্ডিং ও তার পাশের বাগরি মার্কেটে। তারই জেরে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুদিন ধরে স্যানিটাইজ করা হয়েছে মেহতা বিল্ডিং। বাদ পড়েনি বাগরি মার্কেটও।
পুলিশ ও এলাকা সূত্রে জানা গিয়েছে, ভবানীপুরের পদ্মপুকুর রোডের একটি বহুতলে পরিবারের সঙ্গে থাকেন ওই ওষুধ ব্যবসায়ী। মেহতা বিল্ডিংয়ের সি ব্লকের একতলায় রয়েছে তাঁর ওষুধের দোকান। এদিন অন্য ওষুধ ব্যবসায়ীরা জানান, জরুরি পরিষেবা হওয়ার কারণে লকডাউনের মধ্যেও কয়েক ঘণ্টার জন্য তাঁরা অনেকেই দোকান খোলা রাখছেন। ভবানীপুরের ওই ব্যবসায়ী প্রায় প্রত্যেকদিন দোকানে আসতেন। গত ৩১ মার্চ তিনি শেষ আসেন দোকানে। পরিবারের কাছ থেকে অন্য ব্যবসায়ীরা খবর পেয়েছেন যে, এর পরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ওই ব্যবসায়ীর শরীরে করোনা ভাইরাস থাবা দিয়েছে, এই খবর পাওয়ার পরই পুরো মেহতা বিল্ডিং জুড়ে শুরু হয়ে যায় আতঙ্ক। বিশেষ করে সি ব্লকের একতলার অনেক ব্যবসায়ী দোকান বন্ধ করে দেন। খবর যায় পুরসভায়। পুরো বাড়িটি ওষুধ মেশানো জল দিয়ে স্যানিটাইজ করা হয়। এদিনও পুরসভার গাড়ি বড়বাজারে আসে। ওই ব্যবসায়ীর দোকান প্রত্যেকটি তলার মেঝে ও আশপাশের দোকানগুলি স্যানিটাইজ করে পুরসভা। বাণিজ্যিক বাড়িটির একতলার এক ওষুধ ব্যবসায়ী জানান, তাঁদের অনেকেই কথা বলেছেন ওই করোনা আক্রান্ত ব্যবসায়ীর সঙ্গে। আবার দোকানে ক্রেতারাও যাতায়াত করেছেন। তাই ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কোনওভাবে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে কি না, তা তাঁরা কেউ জানেন না। সেই কারণে ওষুধ ব্যবসায়ীদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এই খবর পেয়ে পাশের বাগরি মার্কেটের ব্যবসায়ীদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। তাই ওই বাণিজ্যিক বাড়িটিও স্যানিটাইজ করা হয়েছে।
এলাকাভিত্তিক হটস্পট চিহ্নিত করে সেগুলিকে সিল করলেই করোনা ভাইরাসের মোকাবিলা করা যাবে না। এজন্য প্রয়োজন গোটা রাজ্যে লকডাউন আরও কড়া ভাবে জারি করা। এমনই মনে করছে বাংলার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। রাজস্থানের ভিলওয়াড়া মডেলের পথে হেঁটে গোটা রাজ্যকেই সিল করার কথা ভাবছে প্রশাসন। খুব দ্রুত এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। অর্থাত্ যে সব গ্রাম বা এলাকায় করোনা পজেটিভ ধরা পড়েছে, সেই সব জায়গা একেবারে সিল করে দিতে চাইছে প্রশাসন। জরুরি পরিষেবা ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়া আর কেউ বা কোনও জিনিস সেই এলাকায় যাতে না ঢুকতে পারে, তা নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হতে পারে। তবেই একমাত্র করোনার ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। শুক্রবার রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা বলেন রাজ্যে কোনও আক্রান্তের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না। আতঙ্ক ও গুজব ছড়িয়ে পড়া রুখতেই এই সিদ্ধান্ত।