কলকাতা: সংক্রমণের হার বুঝতে প্রয়োজন বেশি মাত্রায় টেস্ট। সেক্ষেত্রে এবার শহর জুড়ে চলবে লালারস নমুনা সংগ্রহের প্রক্রিয়া। এই লালারস সংগ্রহে কলকাতার সমস্ত ওয়ার্ডে এবার পৌঁছে যাবে আম্বুল্যান্স। ইতিমধ্যেই রাজ্য স্বাস্থ্যদফতরের কাছে এই অ্যাম্বুলেন্সের জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার এমনটাই জানান কলকাতা পুর নিগমের প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম।
কলকাতা পুর নিগমের তরফে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে সোয়াব টেস্ট। মঙ্গলবার চেতলাতে স্বাস্থ্যকর্মীদের দ্বারা সোয়াব টেস্ট চলে। এদিন এই কাজ পরিদর্শনে যান খোদ প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। পিপিই পোশাক পরে এলাকাবাসীদের লালারস সংগ্রহ করেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। প্রতিদিন এক একটি অ্যাম্বুলেন্সে ৫০ জনের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। একদিনে মোট ৩০০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, গত চারদিনে প্রায় চারদিনে প্রায় ১২০০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এই নমুনাগুলি পরীক্ষার জন্য পিজি ও এনআরএস হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।
কলকাতা পুর নিগমের তরফে জানানো গিয়েছে, এবার থেকে সারা মাস ধরে চলবে এই লালারস সংগ্রহ করার কাজ। মূলত সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের থেকেই এই লালা রস সংগ্রহ করা হবে। এই নমুনার রিপোর্ট এলে, রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যের। এই কাজটি সমগ্র পরিচালনা করবে কলকাতা পুর নিগমের স্বাস্থ্য বিভাগ। শহরে সংক্রমনের ভাব ও বুঝতেই এই উদ্যোগ বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, রাজ্য সংক্রমিত ৫১৬টি এলাকার মধ্যে ৩১৮টি এলাকাই কলকাতার অন্তর্গত। এদিকে ইতিমধ্যেই বিপদজনক ভাবে সংক্রমিত হয়েছে কলকাতা পুর নিগমের অন্তর্গত বেশ কয়েকটি বরো। কলকাতা পুর নিগমের অন্তর্গত ৭, ৫,৪,৬ নম্বর বরোগুলিতে সংক্রমনের হার বেশি ছিল। যে তিনটে এলাকা রেড জোনের তালিকায় শীর্ষে ছিল অর্থাৎ ৭, ৫,৪ নম্বর বরো সেখানে ১০০ শতাংশের বেশি হারে সংক্রমিত এলাকা বা রাস্তার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ওই এলাকাগুলিতে ৮ নম্বর বরোতে ১২৬ শতাংশ, ৫ নম্বর বরোতে ১১৩ শতাংশ এবং ৪ নম্বর বরোতে ১৩৪ শতাংশ সংক্রমিত রাস্তার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৫ নম্বর বরোতে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে সংক্রমিত রাস্তা।
সেখানে ১১ টি সংক্রমিত এলাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২৪ টি। এই এলাকায় বৃদ্ধির হার ২১৮ শতাংশ।এই ওয়ার্ড গুলিতে দিনে দিনে ক্রমশ বেড়ে চলেছে সংক্রমিত রাস্তার সংখ্যা। এই অবস্থায় মাইক্রো প্ল্যানিং পদ্ধতিতে কাজ শুরু করেছে কলকাতা পুর নিগমে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে সচেতনতা প্রচার চালাচ্ছেন তারা। একই সঙ্গে এলোপ্যাথিক ও হোমিওপ্যাথিক ওষুধ দিচ্ছিলেন পুর নিগমের স্বাস্থ্যকর্মীরা। তার সাথে ই শহরে করোনা সংক্রমনের মাত্রা বুঝতে রেপিড টেস্ট করানো শুরু হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রের নির্দেশে আপাতত তা বন্ধ। তাই এবার, শহরের বিভিন্ন সংক্রমিত এলাকায়, বিশেষ করে ঘনজনবসতিপূর্ণ এলাকায় নাগরিকদের সোয়াব টেস্ট করানোর দায়িত্ব নিয়েছে কলকাতা পুর নিগমে।