কলকাতা: একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে সময়টা বিশেষ ভালো যাচ্ছে না তৃণমূল কংগ্রেসের। একদিকে একের পর এক দলীয় নেতাদের পদত্যাগ, অন্যদিকে দুর্বলতার সুযোগে বিরোধী দলগুলোর ক্রমাগত আক্রমণ; দুইয়ের মাঝে দিশাহারা দেখাচ্ছে শাসক শিবিরকে। দলের কাজ নিয়ে ঘাসফুলের অভ্যন্তরেই যে তৈরি হচ্ছে অসন্তোষ, এদিন আরো একবার সামনে এল সেই ছবি।
আরও পড়ুন- ক্ষমতায় ফিরে প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠক হবে সিঙ্গুরে, প্রতীকী শিলান্যাস সুজনের!
বীরভূমের একটি জনসভায় সরকারি প্রকল্পের কাজ নিয়ে প্রকাশ্য মঞ্চেই এবার অসন্তোষ প্রকাশ করলেন খোদ রাজ্যের মন্ত্রী। ওই মঞ্চেই উপস্থিত আরেক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন তিনি। বেকারত্বের প্রসঙ্গে এভাবেই এদিন তৃণমূলের অন্দরে সাময়িক বিশৃঙ্খলার ছবি ধরা দেয় বোলপুর এলাকায়।
জানা গেছে, সরকারি প্রকল্পের কাজ নিয়ে এদিন প্রকাশ্যে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা ও স্বর্নীভর গোষ্ঠী দফতরের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে। একই মঞ্চে উপস্থিত মৎস মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংয়ের প্রতি সরাসরি প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, “বীরভূমে কি বেকার নেই?” রাজ্য সরকারের দুই মন্ত্রীর মধ্যে এহেন বাক্যালাপে স্বভাবতই অস্বস্তি বেড়েছে শাসক দলের।
ঠিক কোন প্রসঙ্গে ফুঁসে উঠেছেন সাধন পাণ্ডে? সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী ঘোষিত ‘মুক্তিধারা’ প্রকল্পের বিশেষ সুবিধা পায় নি বীরভূম জেলা। তা নিয়েই এদিন অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে। বীরভূমের সবলা মেলার অনুষ্ঠানের মঞ্চে বক্তব্য রাখতে উঠে এদিন তিনি বলেন, “বীরভূমে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর গ্রুপ রয়েছে প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষ। একে ১১ লক্ষে নিয়ে যেতে হবে।” এরপর জেলার ২৫ জন সুপারভাইজারকে মঞ্চে ডাকেন তিনি। প্রকাশ্যেই জানান জেলায় বেকারত্বের তালিকা তাঁরা সঠিকভাবে তৈরি করতে পারছেন না।
আরও পড়ুন- বিদায়ী তৃণমূলের নেতাদের প্রাধান্য! আদি-নব্য সংঘাত বিজেপির অন্দরে
এ প্রসঙ্গেই মঞ্চে উপস্থিত মৎস্য মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংয়ের দিকে ছুঁড়ে দেন প্রশ্ন। জানতে চান, “বেকারের যে তালিকা সুপারভাইজার দিয়েছে তাতে আপনি খুশি চন্দ্রনাথবাবু?” স্বভাবতই এহেন প্রশ্নে রীতিমতো অপ্রস্তুত দেখায় মৎস্য মন্ত্রীকে। তবে শীঘ্রই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়। বলা বাহুল্য, রাজ্যে শাসকদলের সাম্প্রতিক অবস্থার নিরিখে বীরভূমের ঘটনা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।