‘শেষ হবে নীল-সাদা, দুয়ার জুড়ে গর্ত’! তৃণমূলকে চাঁচাছোলা ভাষায় বিধলেন রুদ্রনীল

‘শেষ হবে নীল-সাদা, দুয়ার জুড়ে গর্ত’! তৃণমূলকে চাঁচাছোলা ভাষায় বিধলেন রুদ্রনীল

6102055d5878c0971d61e58a47565ed9

কলকাতা: রাজ্যে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ২১ কোটি টাকা উদ্ধার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)৷ অন্যদিকে, টানা ২৭ ঘণ্টা জেরার পর শনিবার সকালে গ্রেফতার পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ গ্রেফতারের পরই মেডিক্যাল টেস্টের জন্য তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় জোকা ইএসআই হাসপাতালে৷ আজই আদালতে তোলা হবে তাঁকে৷ রাজ্যের নিয়োগ দুর্নীতিতে এমন এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে স্বভঙ্গিমায় ফেসবুকে তীব্র কটাক্ষ করলেন বিজেপি নেতা রুদ্রনীল ঘোষ৷ মমতা সরকারের ‘দুয়ারে’ প্রকল্প প্রসঙ্গ টেনে চরম বিদ্রূপ করে তিনি বললেন ‘দুয়ারে গর্ত’৷ খোটা দিলেন মুড়ি নিয়েও৷ 

এদিন কবিতার সুরে রুদ্রনীল বলেন, ‘২১ এ জুলাই মঞ্চ থেকে বেঁচল দিদি মুড়ি৷ ২২ জুলাই অর্পিতাদের ফ্যাটে কোটি ২০৷’’ এই টাকা কি মুড়ি বেচে এসেছে নাকি চাকরি চুরির টাকা? সরাসরি আঙুল উঁচিয়ে তৃণমূলনেত্রীর দিকে  প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন অভিনেতা৷ বাঁকা সুরে রুদ্দ বলেন, ‘‘বলি ও দিদিভাই জবাব তো দিন, মালিক তো আপনি একা!’’

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় রাজ্য৷ তবে এতদিন যে চিত্র ভিন রাজ্যে দেখা গিয়েছিল, সেই চমকে দেওয়ার মতো ছবি এবার দেখল বাংলার মানুষ৷ থরে থরে সাজানো নোটের পাহাড়৷ কোথা থেকে এল এই পহাড়প্রমাণ টাকা? কারা রয়েছে এর নেপথ্যে? এই প্রশ্ন নিয়ে যখন জেরবার বাংলা, তখন খোঁচা দিয়ে রুদ্রনীল বললেন, ‘‘২০ কোটির নোটের পাহাড় দেখল বঙ্গবাসী, অর্পিতাদের উন্নয়নে আমার দিদি খুশি৷’’ 

বিজেপির সংস্কৃতি সেলের ভারপ্রাপ্ত নেতা ফুট কেটে আরও বলেন, ‘‘তৃণমূলের দুর্গাপুজোয় অর্পিতারাই মুখ (নাকতলা উদয়ন), তৃণমূলের উন্নয়নে অর্পিতারাই মুখ, নেতার কাছের মানুষ হলেই পাবে অপার সুখ৷ কিন্তু সুখের ঘরে অসুখ হল, ঢুকল ঘরে ইডি৷ জেরার মুখে মন্ত্রী জানায়, পাপের এবিসিডি৷’’ প্রসঙ্গত, এই অর্পিতাই ছিলেন নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘের মুখ৷ যে পুজো পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পুজো বলেই পরিচিত৷ এদিন তল্লাশি চালিয়ে একটি পোস্টারও উদ্ধার করে ইডি। যেখানে নাকতলা উদয়ন সংঘের মুখ হিসেবে অর্পিতার ছবি দেখা যায়। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পুজোর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসডর করা হয়েছিল অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে৷ 

রুদ্রর কবিতায়, ‘‘২০ কোটির গল্প দিয়ে ধরা পড়ার শুরু, ১০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও ঘাবড়িও না গুরু৷’’ তবে অর্পিতা একা নন, তাঁর মতো আরও অনেকে লুকিয়ে আছেন বলেও দাবি বিজেপি নেতার৷ তিনি বলছেন, নির্লজ্জ ভাবে লুট করে চলেছেন রাজ্যের মন্ত্রীরা৷ ‘‘কয়লা, বালি, গেরস্থালী, যেই না টাকার গন্ধ, হকের টাকা লুটবে এরাই প্রাপ্য তোমার বন্ধ৷ রাস্তা জুড়ে বেকার বসে কারণ তাঁরা যোগ্য৷ মা মাটি মানুষ দলের কাছে সবাই ভোগ্য৷’’

তৃণমূলের বিরুদ্ধে কাটমানির যে অভিযোগ রয়েছে, তাতে শান দিয়েই এদিন রুদ্র বলেন, টাকা দিলেই এ রাজ্যে চাকরি হবে৷ টাকা খেয়েই এই দলটা বেচে রয়েছে৷ তৃণমূলের সকলকে ফেরেববাজ বলতেও দ্বিধা করেননি তিনি৷ 


মানুষের উদ্দেশে তাঁর বক্তব্য, ‘‘দাদা, ২১-এ জিতেয়েছিলেন, চোরকে দিলেন গদি, মিলিয়ে নেবেন ক’দিন পরে এরা বেঁচবে গঙ্গা নদী৷’’ এমনকী হাওড়া ব্রিজের নাটবল্টু খুলে বেঁচে দিতেও তৃণমূল পিছপা হবে না বলে দাবি তাঁর৷ তাঁর কথায় একদিন এ রাজ্যকে চেঁচে সাফ করবে শাসকদল৷ 

‘‘পড়লে ধরা বলবে এরা সব নাকি রাজনীতি, গাইছে গলজ মানতে হবে এটাই পল্লিগীতি৷’’ রুদ্রর অভিযোগ, দিদি বারবার মিথ্যে বুলি আওড়ান৷ তিনি বলেন, ‘‘মানুষ মাত্র ভুল তো করে দিন করে দিন ক্ষমা, সব সিটেতে প্রার্থী আমি, শুনছ কাকা-মামা৷ অনেক হল মিথ্যে বচন পাবলিক নয় গরু, নীল সাদা রং যাবেই ধুয়ে কাউন্টডাউন শুরু৷  

কবিতার শেষ পংক্তিকে রুদ্রর দাবি, ‘‘সব চোরেরা পড়বে ধরা, ২০ দিয়ে পার্থ, দুয়ারে মত পাল্টে এবার দুয়ার জুড়ে গর্ত৷’’