ভূতের আতঙ্কে এক কাপড়ে গ্রাম ছেড়ে পালাচ্ছেন বাসিন্দারা

ভূতের আতঙ্কে এক কাপড়ে গ্রাম ছেড়ে পালাচ্ছেন বাসিন্দারা

আগরতলা: ঘন গাছ গাছালিতে ঘেরা এই গ্রামের দিনের বেলাতেও সেই অর্থে প্রবেশাধিকার নেই সূর্যদেবের৷ ফলে দিনের বেলাতেও এখানকার পরিবেশ বেশ ছমছমে৷  এহেন এলাকায় সম্প্রতি বেড়েছে ভূতের উপদ্রব৷ ইতিমধ্যে ভূতের তাণ্ডবে দু’জন স্থানীয় বাসিন্দারা মৃত্যুও হয়েছে বলে অভিযোগ৷ এরপরই আতঙ্কে গ্রাম ছাড়ছেন বাসিন্দারা৷

ঘটনাটি ত্রিপুরার গন্ডাছড়া মহকুমার রইস্যাবাড়ি ব্লকের সেনকুমার পাড়া। পাড়ায় প্রায় পয়তাল্লিশ পরিবারের বাস। ইতিমধ্যে ভূতের আতঙ্কে পাঁচটি পরিবার এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে৷ গ্রামের সকলই চাকমা জনজাতির৷ অভিযোগ, গত কয়েক মাস ধরে জঙ্গলে ঘেরা এই এলাকায় ‘তেনাদের’ যাতায়াত শুরু হয়েছে৷ বাসিন্দারা বলছেন, প্রায় প্রতিদিন নিয়ম করে হানা দিচ্ছে ভূতের দল৷ শুধু রাত নয়, দিনের বেলাতেও নাকি অনেকে তাঁদের সাক্ষাৎ পেয়েছেন৷

সড়ক থেকে গলি তস্য গলির ভিতর দিয়ে যাওয়া প্রান্তিক জনপদটিতে এখন ভূতের আতঙ্ক এমনভাবেই চেপে বসেছে যে করোনা আবহে, চরম দুর্দিনেও এক কাপড়ে বসতভিটে ছেড়ে পালাচ্ছেন বাসিন্দারা৷ গ্রামবাসীদের এমন ভূত আতঙ্কের খবর পৌঁছেছে প্রশাসনের কাছেও৷ খবর পেয়ে  ভূত-আতঙ্কে জড়সড় গ্রামটিতে হানা দিয়েছিলেন ত্রিপুরা গন্ডাছড়া মহকুমার মহকুমা শাসক অরিন্দম দাসের নেতৃত্বে বিশাল প্রশাসনিক দল ঘটনাস্থলে পৌঁছান৷  গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সত্যতা জানতে চান।

বিস্তারিত জানার পর মহকুমা শাসক অরিন্দম দাস গ্রামবাসীদের অভয় বার্তা শুনিয়েছেন৷ বলেছেন, ‘‘ এলাকাটি যেভাবে জঙ্গলে ঘেরা তাতে যেকোনও মানুষেরই ভয় লাগাটা স্বাভাবিক৷ তবু দুষ্টু চক্রের সম্ভবনাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না৷ তাই প্রাথমিকভাবে বন দফতরের অনুমতি নিয়ে বসতি লাগোয়া জঙ্গল কেটে সেখানে বৈদ্যুতিন আলো লাগানোর ব্যবস্থা করা হবে৷ কারণ, এভাবে ভূতের আতঙ্কে একটা আস্ত গ্রাম খালি হয়ে যাক, এটা তো কাম্য নয়৷’’ তবু ভূতের আতঙ্কে ত্রস্ত গ্রামবাসীদের একাংশ এলাকায় নিজেদের ভিটে মাটি ছেড়ে অন্যত্র পালানোর জন্য তৈরি হচ্ছেন৷ বলছেন, ‘বেঁচে থাকলে তবে তো ভিটে!’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *