ফনির জেরে বাংলায় জারি রেড অ্যালার্ট, ৮ জেলায় প্রভাব

কলকাতা: এখনও বাংলার মাটিতে পা রাখেনি ঘূর্ণিঝড় ফনি৷ কিন্তু, তার আগে ঝড়ের প্রভাব শুরু হয়ে গিয়েছে৷ আট জেলায় শুরু বৃষ্টি৷ ফনির জেরে ইতিমধ্যেই রেড অ্যালার্ট জারি হয়েছে বাংলায়৷ ইতিমধ্যেই ওড়িশা উপকুলে তাণ্ডব চালানোর পর বাংলার দিকে পা বাড়িয়েছে ফনি৷ ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার বেগে ঝড় উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছে হাওয়া অফিস৷ ঝড়ের প্রভাবে ইতিমধ্যেই

605e6e3bb42d3ce2b849a1027859765b

ফনির জেরে বাংলায় জারি রেড অ্যালার্ট, ৮ জেলায় প্রভাব

কলকাতা: এখনও বাংলার মাটিতে পা রাখেনি ঘূর্ণিঝড় ফনি৷ কিন্তু, তার আগে ঝড়ের প্রভাব শুরু হয়ে গিয়েছে৷ আট জেলায় শুরু বৃষ্টি৷ ফনির জেরে ইতিমধ্যেই রেড অ্যালার্ট জারি হয়েছে বাংলায়৷ ইতিমধ্যেই ওড়িশা উপকুলে তাণ্ডব চালানোর পর বাংলার দিকে পা বাড়িয়েছে ফনি৷ ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার বেগে ঝড় উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছে হাওয়া অফিস৷ ঝড়ের প্রভাবে ইতিমধ্যেই বেপরোয়া ভাবে ফুঁসতে শুরু করেছে দীঘার সমুদ্র৷ গার্ডওয়াল ছাড়িয়ে সমুদ্রের ঢেউ চলে এসেছে সৈকত সরণিতে৷ ঝাড়গ্রাম হয়ে বাংলার দিকে পা বাড়িয়েছে ফনি৷

হাওয়া অফিসের আশঙ্কা, পশ্চিমবঙ্গে আছড়ে পড়তে পারে ভয়াল ঘূর্ণিঝড়। ঘণ্টায় ৯০-১০০ কিমি বেগে বাংলায় আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড়। ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১১৫ কিমি। ইতিমধ্যেই কালো মেঘে ঢেকেছে কলকাতা-সহ বাংলার আকাশ, শুরু হয়েছে বৃষ্টিও। ফণীর আশঙ্কায় পুরোদমে সতর্ক প্রশাসন।পশ্চিমবঙ্গে ফণী পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে নবান্নে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। আগামী রবিবার পর্যন্ত ওই কন্ট্রোল রুম থেকেই পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। ১২ ঘন্টার দুটি শিফটে এই কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে থাকবেন একজন আইএএস অথবা ডব্লিউবিসিএস (এগজিকিউটিভ) পদমর্যাদার আধিকারিক। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীদেরও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলায় রাজ্য সরকার বেশ কয়েকটি হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে। এই নম্বরগুলি হল – ০৩৩ ২২১৪-৩৫২৬, ০৩৩ ২২১৪-৫৬৬৪, ০৩৩ ২২৫৩-৫১৮৫, ১০৭০ (টোল ফ্রি)। অন্যদিকে, খড়গপুরে থেকে গোটা পরিস্থিতি নজরে রাখবেন বলে জানিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নির্দিষ্ট সময়ের অনেকটাই আগে ঘণ্টায় ১৭৫ কিলোমিটার বেগে ঘূর্ণিঝড় ফনি আছড়ে পড়েছে ওডিশায়। সকাল আটটা থেকে দশটার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রটি পুরীর কাছে উপকূল অতিক্রম করেছে৷ এবার ফনির লক্ষ্য বাংলা৷ দীঘার উপকূলে আঘাত হানতে চলছে ফনি৷

হাওড়া অফিসের তরফে বৃহস্পতিবার জানানো হয়, আজ মধ্যরাত থেকে শনিবার বাংলায় ঢুকতে পারে ফনি৷ কিন্তু, পরিস্থিতি যা, তাতে আজ বিকালের মধ্যেই বাংলায় ঢুকে যাবে বিধ্বসী ঘূর্ণিঝড়৷ জানা গিয়েছে, দীঘা থেকে ফনির দূরত্ব ৩০০ কিলোমিটারের কাছাকাছি৷ ফোনির প্রভাবে ইতিমধ্যেই বাংলায় বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে৷ কলকাতা বিমানবন্দর আজ বিকেল তিনটে থেকে পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে৷ আজ রাত থেকে বিমানবন্দর বন্ধ হওয়ার কথা ছিল৷

ফনির জেরে বাংলায় জারি রেড অ্যালার্ট, ৮ জেলায় প্রভাবঝড়ের কেন্দ্রটি ২৫ কিলোমিটার চওড়া। এখনও পর্যন্ত একজনের মৃত্যর খবর পাওয়া গিয়েছে। পুরীর সাক্ষীগোপালে গাছ পড়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। এরই পাশাপাশি কর্তব্যে অবহেলার জন্য রায়গড়ার মুখ্য জেলা মেডিকেল অফিসার শিবপ্রসাদ পাধিকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তিনি কাজে আসেননি। প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছে সর্বত্র। ফনির দাপটে ইতিমধ্যেই লন্ডভন্ড ওডিশার উপকূলের এলাকাগুলি। উত্তাল সমুদ্রে বিরাট উঁচু ঢেউ।

ফনির জেরে বাংলায় জারি রেড অ্যালার্ট, ৮ জেলায় প্রভাবসকাল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত গোপালপুরে ১৫০ মিলিমিটার, পুরীতে ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। অন্ধ্রের শ্রীকাকুলাম ও বিশাখাপত্তনমেও সারারাত প্রবল বৃষ্টিপাত হয়েছে। ইতিমধ্যেই ১০ লাখ মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, ওডিশা উপকূলে সাইক্লোনের প্রবল প্রভাব থাকবে এদিন বিকেল পর্যন্ত। তারপর তা সরে যাবে উত্তর-পশ্চিম দিকে। শনিবার ভোরে তা পৌঁছবে পশ্চিমবঙ্গে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি ক্রমশ কমতে থাকবে।

ফনির তাণ্ডবের আশঙ্কায় শুক্র ও শনিবার বাতিল করা হল মুখ্যমন্ত্রীর সভা। আগেই সতর্কতা জারি করায় আগামী ৪৮ঘণ্টা তাঁর সব রাজনৈতিক কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে৷

শুক্রবার, ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জোড়া সভা। শনিবার মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের প্রচার সভা। শুক্রবার ঘাটালে সভার কথা ছিল তাঁর। এদিন, খড়্গপুরে থাকবেন তৃণমূল নেত্রী। সেখান থেকেই পরিস্থিতির উপর নজর রাখবেন। বৃহস্পতিবারই নবান্নে সমস্ত বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। টুইট করে রাজ্যবাসীকে সতর্ক থাকার ও নিজেদের খেয়াল রাখার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

পুরীতে ইতিমধ্যেই আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণীঝড় ফণী। এরাজ্যেও তা প্রবেশ করবে। সে বিষয়ে কড়া নজর রাখছে নবান্ন। সজাগ রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীও। আজ সকালেই রাজ্যবাসীর কাছে তিনি আবেদন করেছেন, দয়া করে সকলে বাড়িতেই থাকুন। অবস্থা বুঝে সকলে পাকা বাড়িতে আশ্রয় নিন। কাঁচা বাড়িতে কেউ থাকবেন না। সাবধানে থাকুন।আর কোনওরকম গুজবে কান দেবেন না, গুজব ছড়াবেন না। রাজ্য সরকার আপনাদের পাশে রয়েছে এবং প্রশাসন সর্বদা নজর রাখছে পরিস্থিতির উপর৷

এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, ‘‘ফনি সাইক্লোনের কারণে আসন্ন দুর্যোগের জন্য আমি আগামী ৪৮ ঘন্টা আমার সমস্ত রাজনৈতিক কর্মসূচি স্থগিত রাখলাম। আমরা ২৪X৭ মনিটরিং চালাচ্ছি। সমস্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছি। সাধারণ মানুষের কাছে আমরা সহযোগিতা কামনা করি। আগামী ২ দিন সাবধানে থাকুন, নিরাপদে থাকুন।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *