হাওড়া: একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে একের পর এক পদত্যাগ তথা দলত্যাগের ঘটনায় দিন দিন নড়বড়ে দেখাচ্ছে শাসক শিবিরের ভিত। ভোটের মুখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল থেকে কেউ পদত্যাগ করেই ক্ষান্ত থাকছেন, কেউ আবার ক্ষত উস্কে যোগ দিচ্ছেন বিরোধী শিবিরে। রাজ্যের ভোট পূর্ববর্তী এই সাম্প্রতিক হিরিকেই নবতম সংযোজন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইস্তফা। তবে এখানেই কি থামবে পদত্যাগ? জল্পনা উস্কে রাজীবের সমর্থনে এবার সুর চড়ালেন রথীন চক্রবর্তীও।
হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র রথীন চক্রবর্তী এদিন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, ‘‘রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলেছেন সেই কথাটাই আমিও বলতে চাই। আমি পেশায় একজন চিকিৎসক। মানুষের দুঃখে পাশে দাঁড়াতে চেষ্টা করি।’’ গত ২ বছর ধরে দলের অভ্যন্তরে মানুষের জন্য কাজ করতে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ভবিষ্যতে রাজনৈতিক কেরিয়ার নিয়ে কী ভাবনা চিন্তা করছেন? সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে রথীন চক্রবর্তী জানান, ‘‘আমি রাজনৈতিক ভাবে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছি। কিন্তু আমার মানুষের জন্য কাজ করা থেমে থাকেনি। মানুষের জন্য কাজই করে যাব।’’ দলের মধ্যে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রাখার চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ করেছেন রথীনবাবু। হাওড়া জেলা থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের ভিত যে ক্রমে দুর্বল হচ্ছে, তার ইঙ্গিত পাওয়া গেছিল ইতিমধ্যেই। কিছুদিন আগেই দলের মন্ত্রীত্ব থেকে ইস্তফা দেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা। এরপর আজ বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের ঘটনা সামনে এল। কেন হাওড়ায় শাসকদলের এই দুরবস্থা? প্রাক্তন মেয়র রথীন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ‘‘প্রত্যেকেই কাজ করতে গিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। তাই বিকল্প বেছে নিতে আমরা বাধ্য হয়েছি।’’
তবে রাজনীতির মঞ্চ থেকে সরে গিয়ে মানুষের জন্য কাজ করার পথ বন্ধ করছেন না কেউই। এদিন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও দিয়েছেন সেই ইঙ্গিত। এর ফলেই গেরুয়া শিবিরে তাঁর যোগদান নিয়ে জল্পনা আরো জোরদার হয়েছে। উল্লেখ্য, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘যাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসের ক্ষতি করতে চেয়েছিলেন, তাঁরা তা করতে না পেরে অন্য দলে স্থানান্তরিত হচ্ছেন।’’ পাশাপাশি বিজেপির উদ্দেশ্যে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘রাজ্যে বিজেপির সাংগঠনিক ক্ষমতা এমনই যে ভাড়া করা প্লেয়ার দিয়েই কাজ চালাতে হচ্ছে।’’