কলকাতা: বিরলতম অঙ্গবিকৃতি থেকে রেহাই দিয়ে এক শিশুকন্যাকে নতুন জীবন দিলেন পিজি হাসপাতালের শল্য চিকিৎসকরা। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার নিবাসী এক দরিদ্র অটোরিক্সা চালকের ছোট মেয়ের শরীরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সফল হয়েছেন চিকিৎসকদের বিশেষ দল৷
দ্বিতীয় শ্রেণির এই ছাত্রীর শরীরে জন্ম থেকেই ইউরিন ধরে রাখার ক্ষমতা ছিল না। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উত্তরোত্তর তার এই সমস্যা বাড়তে থাকে৷ সঙ্গে পেটের যন্ত্রণা৷ শারীরিক অস্বস্তিও যুক্ত হয় মেয়েটির শরীরে। কিন্তু এই সমস্যার কূল কিনারা করতে না পেরে মেয়েটির পরিবার প্রথমে তাকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানেও কোনো সুরাহা না হওয়ার শেষে কলকাতার প্রসিদ্ধ পিজি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসকরা এটিকে ইউটেরাসে টিউমার ধরে অপারেশন করতে গেলে অপারেশন থিয়েটারে চিকিৎসকদের অবাক করে মেয়েটির দুই বিরল অঙ্গবিকৃতি৷ চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এই সমস্যার নাম ‘ইউরেজেনিটাল সাইনাস’ এবং ‘সেপটাল ভ্যাজাইনা’। সাধারণ ভাষায় মেয়েটির স্ত্রীঅঙ্গ এবং ইউরিন বেরোনোর একটিই ছিদ্র৷ সেটি আকৃতিতে ছোট। রয়েছে দুটি স্ত্রীঅঙ্গ৷
পিজি হাসপাতালের শল্য চিকিৎসকরা জানিয়েছেন এটি বিরলের মধ্যে বিরলতম একটি অঙ্গ বিকৃতি। এই হাসপাতালের শল্য বিভাগের প্রধান ডাঃ ঋষভ দেব পাত্র ও অন্যতম সহযোগী ডাঃ অলককুমার সিনহা জানিয়েছেন, এমন বিকৃতি এর আগে তিনি কোনো মেয়ের শরীরে দেখেননি। দীর্ঘ পাঁচ ঘন্টার অপারেশনে শিশুটির সমস্যা দূর করা হয়৷ তার পৃথক স্ত্রীঅঙ্গ ও ইউরিনের পথ গঠন করা হয়। এই অপারেশন সফল হওয়ার পর সাত বছরের এই শিশুকন্যার মা বলেন, “চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানানোর ভাষা নেই আমার। আমার মেয়েকে ওনারা নতুন জীবন দান করেছেন৷”