শবর-সমাজে প্রথম স্নাতক! শিক্ষা আলো ছড়াতে চান রমনিতা

পুরুলিয়া: 'দিন আনি দিন খাই'য়ের সংসার। টালির চাল দিয়ে মাঝেমধ্যেই বৃষ্টির জল পড়ে ঘরের মধ্যে। কিন্ত তা কখনও রমনিতা শবরকে পিছিয়ে পড়তে দেয়নি। পড়াশোনা ক্রমাগত চালিয়ে যান তিনি। তার ফলও পেলেন হাতেনাতে। জেলার মধ্যে ইতিহাসে প্রথম স্নাতক হলেন তিনি। মোট ৭৬ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন রমনিতা।

পুরুলিয়া: ‘দিন আনি দিন খাই’য়ের সংসার। টালির চাল দিয়ে মাঝেমধ্যেই বৃষ্টির জল পড়ে ঘরের মধ্যে। কিন্ত তা কখনও রমনিতা শবরকে পিছিয়ে পড়তে দেয়নি। পড়াশোনা ক্রমাগত চালিয়ে যান তিনি। তার ফলও পেলেন হাতেনাতে। জেলার মধ্যে ইতিহাসে প্রথম স্নাতক হলেন তিনি। মোট ৭৬ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন রমনিতা।

রমনিতার বাবার নাম মহাদেব শবর। তিনি পেশায় চাষি। রোজগার যা করেন তাতে নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। কিন্তু খাওয়া নিয়ে কখনও ভাবেননি রমনিতা। খাবার প্রতিদিন জুটুক বা জুটুক পড়াশোনা তিনি চালিয়ে গিয়েছেন। বাবাও মেয়ের স্বপ্নের পড়াশোনার স্বপ্নে বাধা দেননি। উলটে মেয়েকে ক্রমাগত সমর্থন জুগিয়ে গিয়েছেন তিনি। তার কারণও রয়েছে যথেষ্ট। মেয়ের মধ্যে প্রথম থেকেই পড়াশোনার প্রতি ব্যাপক উদ্দম লক্ষ্য করেছিলেন তিনি। অন্য বাচ্চারা যখন খেলত, তখনও রমনিতা অন্যদের বই নিয়ে পড়াশোনা করত। মেয়ের প্রচেষ্টা দেখে বাবাও জানপ্রাণ দিয়ে মেয়ের জন্য লড়ে গিয়েছিলেন।

রমনিতা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ভাল ফল করেছিলেন। তারপর পটমদা ডিগ্রি কলেজে ইতিহাসে অনার্স নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। গ্র্যাজুয়েশনে ৭৬ শতাংশ নম্বর পান রমনিতা। এবার তিনি সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে চান। শিক্ষিকা হতে চান তিনি। আর তারপর শবরদের উন্নতি করতে চান। তাদের মধ্যে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে চান রমনিতা। কারণ এখনও শবর সম্প্রদায় এখনও অনেক পিছিয়ে। বেশিরভাগই পড়াশোনা জানে না। তাই এই পিছিয়ে পড়া জনজাতিকে আধুনিকতার আস্বাদন করাতে চান রমনিতা। এদিকে মেয়ের সাফল্যে খুশি রমনিতার বাবা ও মা। মা বেহুলা মেয়েকে আশীর্বাদ করেন, “ও অনেক বড় হোক।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *