কলকাতা: পামেলা গোস্বামী ও রাকেশ সিংয়ের ‘ব্যক্তিগত’ সমস্যা কেন বঙ্গ বিজেপির জন্য সমস্যা তৈরি করছে। এই প্রশ্ন করতে শুরু করেছেন অনেকেই। পশ্চিমবঙ্গে ভারতীয় জনতা পার্টির যুব মোর্চার সদস্য পামেলা মাদক চক্রে গ্রেফতার। আরেক নেতা রাকেশ সিংও গ্রেফতার হয়েছেন। বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই রাজ্যে দলের জন্য বৃহত্তর অভ্যন্তরীণ সমস্যা তৈরি করেছে।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রায় কোকেন রাখার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া বঙ্গ যুব মোর্চার সম্পাদক পামেলা গোস্বামীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বিজেপি নেতা রাকেশ সিংকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। পামেলা গোস্বামী দাবি করেন যে রাকেশ তাকে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র করেছিল। কলকাতা হাইকোর্ট রাকেশ সিং এর স্থগিতাদেশ চেয়ে সিং-এর আবেদন খারিজ করে দেওয়ার পর এই অভিযান চালানো হয়। পুলিশ তাকে পূর্ব বর্ধমান থেকে গ্রেফতার করে।
পুলিশের সূত্র মতে, তদন্তকারীরা বিজেপির উর্ধ্বতন নেতাদের তদন্তের আওতায় আনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি কারণ তাদের মধ্যে অনেকেই জড়িত থাকতে পারে। মনে করা হচ্ছে, এই মাদক মামলা বিজেপির অভ্যন্তরীণ বিবাদের সূত্রপাত ঘটিয়েছে, যেখানে উর্ধ্বতন নেতারা নির্বাচনের মাত্র দুই মাস আগে তৃণমূল কংগ্রেস এবং কংগ্রেস থেকে কর্মী ধরে আনার নীতিকে দোষারোপ করেছেন। বিজেপির একটি অংশের মতে, রাকেশ সিং এবং পামেলা গোস্বামীর মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল টাকা লেনদেনের। সেটা “ব্যক্তিগত ইস্যু” যা এখন কোকেইন মামলা নিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে, যা দলের জন্য ঝামেলার সৃষ্টি করেছে। কিন্তু, ব্যাক্তিগত বিষয় দলের ইমেজকে নষ্ট করতে পারে না।
যুব মোর্চা নেতা পামেলা গোস্বামী একজন প্রাক্তন মডেল এবং টলিউডের একজন স্বল্প সময়ের জন্য অভিনেতা, যিনি দুই বছর আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপির একটি অংশে এই নিয়েই তীব্র আপত্তি। পামেলা বিজেপির দুই দাপুটে নেতার ছত্রছায়ায় কাজ করতেন। দলের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। ওই দুই নেতাও তৃণমূল থেকে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছিলেন। পামেলা গ্রেফতার হওয়ার পর তাদের মধ্যে একজনকে সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিতেও দেখা যায়।
বিজেপি সূত্রে খবর, পামেলা কখনোই রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পরিচিত ছিলেন না। তিনি তৃণমূল থেকে কর্মী হিসেবে বিজেপিতে যোগ দেন। তবে তিনি পার্টিতে নিজের পরিচয় বাড়িয়েছিলেন। কাজ ভালো করছিল। যুব মোর্চা তাকে রাজ্য সম্পাদক করে। তৃণমূলে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন, অভ্যাস এবং ভূমিকা সম্পর্কে বিজেপির উর্ধ্বতন নেতৃত্বের কোন ধারণা ছিল না। সেই খানেই পার্টির অনেকের প্রশ্ন – বিজেপিতে যারা আসছেন তাদের সঠিক নজরদারি চলে তো। রাকেশ সিংও একজন দলত্যাগী। তিনি কলকাতা বন্দর আসন থেকে কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে 2016 নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
গত সপ্তাহে এক প্রেস বিবৃতিতে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “আইন তার নিজস্ব পথ অবলম্বন করবে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে এখনো মামলা করা হয়নি। এটা একটা অভিযোগ, কিন্তু আমরা আইনি বিষয়ে হস্তক্ষেপ করি না।