কলকাতা: আজ নবান্নে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক পূর্ব নির্ধারিত ছিল। তবে তার আগেই ব্যাপক হইচই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্লার পদত্যাগ ঘিরে। যদিও বৈঠক বাতিল হয়নি, বৈঠক বৈঠক এর মত হলেও সেখানে ফের একবার গরহাজির বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এই নিয়ে পরপর চারবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক এড়ালেন তিনি, যা অবশ্যই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে অশনি সংকেত দিচ্ছে।
এদিন কেন রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুপস্থিত রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল দাবি করছে, অসুস্থ থাকার কারণে এদিন বৈঠকে আসতে পারেননি তিনি। যদিও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোন বন্ধ বলে সূত্রের খবর, তাঁর সঙ্গে সরাসরি কেউ যোগাযোগ করতে পারেনি। এদিন রাজ্য মন্ত্রিসভার এই বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন অরূপ রায়, সুজিত বসু, গৌতম দেব, রবীন্দ্রনাথ ঘোষও। নবান্ন সূত্রে খবর, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণেই উত্তরবঙ্গের মন্ত্রীরা এদিনের বৈঠকে আসতে পারেননি। এদিকে কলকাতায় না থাকার জন্য দমকল মন্ত্রী সুজিত বসুও এই বৈঠকে নেই বলে জানানো হয়েছে। তবে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে দলের তরফে কোন প্রতিক্রিয়া এখনো পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। এর আগেও রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুপস্থিত থেকে একাধিক কারণ দেখিয়েছিলেন ও রাজীব। কখনো করোনাভাইরাস পরিস্থিতি, কখনো বা অসুস্থতা। তবে কারণ যাই হোক না কেন, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের দিনদিন দূরত্ব বাড়ছে তা হয়তো এখন কারও অজানা নয়। প্রসঙ্গত, দলের অভ্যন্তরীণ কাজে তিনি যে খুব একটা খুশি নন তা এর আগেই কার্যত জানিয়েছেন রাজীব। সবমিলিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরের অবস্থা যে খুব একটা শক্তপোক্ত নয় তা ক্রমশ প্রকাশ্য।
এদিকে আজ হাওড়ার রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে। মন্ত্রী পদ এবং জেলা সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা। অন্যদিকে তাঁর পদত্যাগ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে দলের একাংশের প্রতি আবারও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া। পাশাপাশি ফের একবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে গরহাজির রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সবমিলিয়ে একদিনে হাওড়ার রাজনৈতিক মহলে বিপুল বিতর্কের আবহ সৃষ্টি হয়েছে। মূলত শুভেন্দু অধিকারীর মত একজন রাজ্যের মন্ত্রী তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বিজেপিতে চলে যাবার পর সামগ্রিকভাবে রাজ্যের শাসকদল কিছুটা হলেও ব্যাকফুটে চলে গিয়েছে। একে একে একাধিক বিধায়ক এবং নেতা তৃণমূল ছেড়েছেন সাম্প্রতিক সময়ে। এমনকি লক্ষ্মীরতন শুক্লাকে নিয়ে জল্পনা সৃষ্টি হয়েছিল যে তিনি বিজেপি তে যেতে পারেন। এদিকে বৈশালী ডালমিয়া এবং রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়েও কম জল্পনা নেই। আর কয়েক মাস পরেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে এই পরিস্থিতি তৃণমূল কংগ্রেস কিভাবে সামাল দেয় তার দিকে নজর থাকবে।