কলকাতা: জল্পনার অবশান৷ মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর এবার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়৷ আজ দুপুরে বিধানসভায় গিয়ে বিধায়কপদ থেকে ইস্তফা দেন রাজীব৷ এর আগে মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেন রাজীব৷ জানিয়ে দেন, তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হলেও নূন্যতম সৌজন্য পাননি দলের অন্দরে৷ তাঁকে স্বাধীন ভাবে কাজ করতে দেওয়া হয়নি বলেও তোলেন অভিযোগ৷ মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালের কাছে তাঁর পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন৷ কিন্তু, পদ্ধতিগত সমস্যা থাকায় রাজীবের পদত্যাগ গ্রহণ হয়নি, উল্টে তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণ করা হয়৷
এর আগে গত ২২ জানুয়ারি রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে পদত্যাগ পত্র দেন রাজীব৷ পদত্যাগপত্র নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। সেই প্রেক্ষিতেই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ওঠে সাংবিধানিক রীতি না মানার অভিযোগ৷ পদত্যাগে ত্রুটি থাকায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে মন্ত্রিসভা থেকে অপসারিত করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্যাখ্যা করা হয়েছে, মন্ত্রীদের নিয়োগকর্তা হলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই ইস্তফা দিতে গেলে তাঁকেই দিতে হবে। পরে তিনি সেই ইস্তফাপত্র নিজে রাজ্যপালের কাছে পাঠাবেন, নিয়ম এটাই। কিন্তু রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইস্তফাপত্র না দিয়ে সরাসরি রাজ্যপালের কাছে তা দিয়েছেন। এক্ষেত্রে সাংবিধানিক রীতি না মানার অভিযোগ উঠছে। এই ভিত্তিতে পদ্ধতিগত কারণে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে অপসারিত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনটাই জানা গিয়েছে নবান্ন সূত্রে। যদিও, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে দাবি করেছেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছেন৷ ওই দিন নবান্ন বন্ধ থাকায় মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে তা পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলেও জানান রাজীব৷
রাজভবনের বাইরে দাড়িয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নিজের সিদ্ধান্তের আসল কারণ ব্যাখ্যা করেছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, যখন তাঁকে না জানিয়ে তার দফতর বদল করা হয়েছিল তার পরেই তিনি ইস্তফা দিতে চেয়েছিলেন কিন্তু তখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে নিরস্ত করেছিলেন। পরবর্তী ক্ষেত্রে তিনি নিজের মনের ভেতর অনেক ক্ষোভ রেখে কাজ করছিলেন সেগুলো সামনে আনেননি। কিন্তু বিগত এক মাসে তার কয়েকজন সহযোদ্ধা’ এবং সহকর্মী যেভাবে তাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন সেটা তিনি কিছুতেই মানতে পারেননি। রাজীবের কথায়, তিনি প্রচণ্ড আঘাত প্রাপ্ত হয়েছেন এবং হয়তো সেই আঘাত থেকেই এই কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন না হলে তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত এখন হয়তো নিতেন না। এবার মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের পর সরাসরি বিধায়ক পদ থেকেও দিলেন ইস্তফা৷ তবে, তাঁর ইস্তফা গ্রহণ করা হয়েছে কি না, তা এখন স্পষ্ট জানা যায়নি৷