হাওড়া: একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে একের পর এক পদত্যাগ তথা দলত্যাগের ঘটনায় রীতিমতো বিপর্যস্ত শাসকদল। আর তৃণমূলের ছত্রছায়া থেকে সরে দাঁড়ানো বিদ্রোহী নেতাদের বেশিরভাগই রয়েছেন হাওড়া থেকে। দীর্ঘদিনের জল্পনার অবসান করে এবার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
এদিন দলত্যাগের পর জনতার উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জনগণের জন্য তাঁর লড়াই চালিয়ে যাওয়ার বার্তাই দিয়েছেন। সেই সঙ্গে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়ার জল্পনাকেও আরো জোরদার করেছেন। সূত্রের খবর অমিত শাহের সভাতেই বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন তৃণমূলের ৪ হেভিওয়েট নেতা। তাঁদের মধ্যে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও রয়েছেন বৈশালী ডালমিয়া, রথীন চক্রবর্তী, প্রবীর ঘোষালের মতো ‘বিদ্রোহীরা’।
ইস্তফার পর পুরোহিতদের জনসভা থেকে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু পারিনি। এটা আমার হতাশা। আপনাদের কাছে আমি ক্ষমা চাইছি।’’ পরক্ষণেই সুর চড়ে বিদায়ী নেতার ভাষণে, ‘‘আমি রাজনীতি করি মানুষের স্বার্থে। মানুষকে বাদ দিয়ে কিছু ভাবি না। আগামী দিনে সুযোগ পেলে মানুষের জন্যই কাজ করব।’’ ব্রাক্ষ্মণ পুরোহিতদের চোখের জল মোছানোর আশ্বাসও দিয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
শাসকদলে নেতা নেত্রীদের নিয়ে ‘ছেলেখেলা’ হচ্ছে, বলেন রাজীব বাবু। “শুধু আমাদের নয়, আপনাদের নিয়েও ছেলেখেলা হচ্ছে”, বলেন রাজীব। তারপরেই দলবদলের ইঙ্গিত শোনা যায় তাঁর কথায়। তিনি বলেন, “আগামী দিনে যে মতে আমার মনে হবে মানুষের স্বার্থে কাজ করতে পারবো সেই মতকেই আমি বেছে নেবো। কারণ মানুষই আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ কথা।”
এদিনের বিদায়ী ভাষণে করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যের ব্রাক্ষ্মণ পুরোহিতদের শোচনীয় অবস্থার কথাই বারবার উঠে আসে প্রাক্তন বনমন্ত্রীর গলায়। তাঁদের পাশে কেউ এসে দাঁড়ায়নি বলে দাবি করেছেন তিনি। বস্তুত, পুরোহিতদের লকডাউন কালে ১০০০ টাকা করে ভাতার আশ্বাস দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এখনও সে ভাতার দেখা মেলেনি। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্বাস, “যতদিন না আপনাদের সেই ভাতার ব্যবস্থা আমি করতে পারছি, ততদিন পর্যন্ত রাস্তায় নেমে আপনাদের পাশেই আমি থাকব।”