‘তুমি একা ভাত খাবে, ওঁরা কেউ খাবে না?’ ফের ঝড় তুললেন রুদ্রনীল

‘তুমি একা ভাত খাবে, ওঁরা কেউ খাবে না?’ ফের ঝড় তুললেন রুদ্রনীল

মৌমিতা বিশ্বাস:  ‘‘তুমি একা ভাত খাবে, ওরা কেউ খাবে না? নিরাপদে তুমি শোবে, ওরা কেউ শোবে না?’’ সত্যই কি আমরা এতটা নিষ্ঠুর? বাঙালির রক্তে রয়েছে একাত্ববোধ৷ আমরা অনুপ্রাণিত স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শে৷ 

স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন, ‘‘হে ভারত, ভুলিও না-নীচজাতি, মূর্খ, দরিদ্র, অজ্ঞ, মুচি, মেথর তোমার রক্ত, তোমার ভাই। হে বীর সাহস অবলম্বন কর, সদর্পে বল-আমি ভারতবাসী, ভারতবাসী আমার ভাই। ’’ আজ আমাদেরও এইভাবেই এগিয়ে আসা উচিত মানুষের স্বার্থে৷ দাঁড়ানো উচিত মানুষের পাশে৷ কবিতার ছন্দে সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই আর্জিই জানালেন অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ৷ 

সকলকে নিয়েই বরাবর বাঁচতে শিখেছে বাঙালি৷ সুখ-দুঃখ সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যেই রয়েছে একাত্ব বোধ৷ প্রতিটি উৎসবে-পার্বণে বাঙালি মিলেছে ‘বারোইয়ারি’তে৷ দুর্গাপুজোয় যখন ঢাকে কাঠি পড়ে, তখন একসঙ্গেই তো নেচে ওঠে বাঙালি৷ তাহলে আজ কেন সংকীর্ণ স্বার্থ নিয়ে উদ্বিগ্ন হবে তাঁরা? 

একদিকে করোনার গ্রাসে জর্জরিত গোটা দেশ৷ এরই মাঝে উম্পুনের তাণ্ডবে তছনছ দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চল৷ মাঠের পর মাঠ খেত ডুবেছে জলের নীচে৷ ভেঙেছে ঘরবাড়ি৷ সবটাই যেন ধুধু প্রান্তর৷ চালচুলোহীন মানুষগুলো আজ বড্ড অসহায়৷ প্রকৃতির এই সর্বনাশা খেলায় ভগবানের চোখেও জল৷ এই দুর্যোগে কেউ ভালো নেই৷ এই অসময়ে মানুষের পাশে মানুষকেই তো দাঁড়াতে হবে৷ আমাদের মধ্যে লুকিয়ে থাকা মানবতা বোধ জেগে উঠলে এই অন্ধকার মেঘ কেটে যাবে৷ ‘‘একটু খাবার চাই.. সামান্য অর্থ, একটু এগিয়ে এসো যতটা সমর্থ্য৷’’ 

এটা আমাদেরই দেশ৷ সবাই আমাদেরই লোক৷ আমরা সকলেই মনে প্রাণে চাই সকলের ভালো হোক৷ মানবজাতির উপর যখন বিপর্যয় নেমে আসে, তখন কেউ একা সেই ধাক্কা সামলাতে পারে না৷ দশজনের চেষ্টাতেই সেই বিপর্যয় থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব৷ ছোট বেলা থেকে আমরা তো এটা শিখেই বড় হয়েছি, ‘‘দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ৷’’ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে চালচুলোহীন লক্ষ লক্ষ মানুষ৷ ঠিক মতো খাবারটুকুও জুটছে না তাঁদের কপালে৷ চারিদিকে শুধুই হাহাকার৷ জাতিধর্ম নির্বিশেষে করোনা আর উম্পুনের জোড়া ফলায় বিদ্ধ মানুষ৷ কেউ মরছে করোনায়, কেউ বা মরেছে উম্পুনে৷ অভাবে জর্জরিত মানুষ রয়েছে মানুষেরই অপেক্ষায়৷ আশায় বুক বেঁধেছে তাঁরা৷ হয়তো কেউ না কেউ এসে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে৷ এর পরেও কি চুপ করে বসে থাকা যায়? 

বহু মানুষ অবশ্য আর্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে৷ বাড়িয়ে দিয়েছে সাহায্যের হাত৷ কিন্তু বাকিরা? ‘‘কি শুনছো চুপ করে নামবে না ময়দানে? তোমারও তো বড় মন একথা তারারা জানে৷’’ এই সংকটে হাতে হাত রেখেই ময়দানে ঝাঁপাতে হবে আমাদের৷ সকলের মিলিত প্রয়াসে একদিন পরিস্থিতি ঠিকই বদলাবে৷ মাঠে ফলবে ফসল৷ কারখানায় কাজ করবে শ্রমিকরা৷ সবাই পেট ভরে ডাল-ভাত খেয়ে বাঁচবে৷ শুধু একটু সহযোগিতা প্রয়োজন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *