কলকাতা: বেফাঁস মন্তব্য এবং বিজেপি নেতা প্রায় সমার্থক। বিভিন্ন ইস্যুতে একাধিকবার দেখা গিয়েছে বিতর্কিত এবং অপমানজনক মন্তব্য করছেন বিজেপি নেতারা। বিতর্কিত মন্তব্য শব্দদুটি বললেই দিলীপ ঘোষ থেকে শুরু করে সায়ন্তন বসু, রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বিজেপির অনেক নেতার নাম মনে আসবে। এবার সেই তালিকায় নাম জুড়ল রাহুল সিনহার। বাংলার মহিলাদের নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তিনি। এই ঘটনায় ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা পশ্চিমবঙ্গে।
গতকাল নামখানায় বিজেপির পরিবর্তন যাত্রার সূচনা করতে এসেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই সভায় বক্তৃতা দিতে গিয়ে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা মন্তব্য করেন, ভিন রাজ্যের যৌনপল্লীতে নাকি বাংলার মহিলাদের ভিড় বাড়ছে! রাহুলের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গে নারীদের কোনো সম্মান নেই। রাজ্যের বাইরে বাংলার বেকারদের ভিড় বেড়েছে এবং যৌনপল্লীতে বাংলার মহিলাদের। মূলত তৃণমূল সরকারকে খোঁচা দিতে গিয়ে এই মন্তব্য করেন রাহুল সিনহা কিন্তু বাংলার মহিলাদের নিয়ে এখানে মন্তব্য মোটেই ভালোভাবে নেয়নি রাজনৈতিক বিরোধী দলগুলি। এই প্রসঙ্গে ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ স্বরূপ জানানো হয়েছে, নারীদের প্রতি এই ধরনের মন্তব্য অত্যন্ত কুরুচিকর এবং লজ্জাজনক। বাংলার শাসক দলের অধীনে রাজ্যের মহিলাদের অনেক উন্নতি ঘটেছে এবং আগামী দিনে ঘটবে। এইভাবে বাংলার মহিলাদের নিয়ে অপমানজনক মন্তব্য কিছুতেই মেনে নেবে না বাংলার মানুষ। এই প্রেক্ষিতে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহার প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার, যে সভায় রাহুল সিনহা এই মন্তব্য করেছেন সেই জনসভার মঞ্চে বিজেপির একাধিক শীর্ষ নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু এই মন্তব্যের বিরোধিতা করে কেউই সেই সময় কিছু বলেননি এবং পরবর্তী ক্ষেত্রেও কোনো মন্তব্য করেননি। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এইভাবে এই ধরনের বিতর্কিত মন্তব্যের বিরুদ্ধে কথা না বলায় আসলে বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ব্যাকফুটে চলে যেতে হতে পারে। কারণ বিজেপি নেতার এই মন্তব্যের বিরোধিতায় একজোট হয়ে যাবে বিরোধী দলগুলো। ফলে এখন কোনরকম বিরোধিতা না করলে পরবর্তী ক্ষেত্রে বিজেপি এই ইস্যুতে আর কিছুই করতে পারবে না।