পুরুলিয়া: ভোটের প্রচারে এসে কর্মসংস্থান থেকে শুরু করে বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের যোগাযোগ নিয়ে প্রশ্ন তুলে ছিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী৷ প্রথম-দ্বিতীয় দফার প্রচারে রাহুলের ভাষণে মমতা বিরোধিতা থাকলেও ষষ্ঠ দফার নির্বাচনে আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কার্যত এড়িয়ে গেলেন রাহুল৷ কর্মসংস্থান ইস্যুতে মমতাকে হাল্কা খোঁচা দিলেও সংক্ষিপ্ত ভাষণে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণের পথ এড়িয়ে কার্যত ‘জোটে’র বার্তাটা দিয়েই রাখেন রাহুল৷
কর্মসংস্থান থেকে শুরু করে কৃষিঋণ, গরিব জনতার অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও মঙ্গলবার পুরুলিয়ায় দাঁড়িয়ে ‘মমতামুখী’ হলেন না কংগ্রেস সভাপতি৷ রাহুলের মুখে এহেন ‘নীরবতা’ দেখে ফের বাংলায় রাজনীতিতে তৈরি হয়েছে নয়া জল্পনা৷ কেননা, এর আগে শহরে এসে কেন্দ্রে সরকার গঠনের জন্য মমতার জন্য দরজা খোলা রাখার বার্তা দেন কংগ্রেস প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ৷ জানিয়ে দেন, আগামী ২৩ মে লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদি বিরোধী সরকার গঠনের ক্ষেত্রে তৃণমূল নেত্রীর সমর্থন নিতে দ্বিধা করবে না রাহুল গান্ধীর কংগ্রেস। এব্যাপারে তৃণমূলের জন্য কংগ্রেস দরজা খোলা রাখছে বলেও জানান রাহুল গান্ধীর দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা৷ একইসঙ্গে অবশ্য তিনি এই ইঙ্গিতও দেন, সারা দেশে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে কংগ্রেসই ফের প্রতিষ্ঠিত হবে ও সেই নিরিখে প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য তারাই স্বাভাবিক দাবিদার হবে।
তৃণমূলের জন্য দরজা খোলা রাখার বার্তা পাঠানোর পর আজ, বাঁকুড়ার সভা থেকে প্রায় ১৬ মিনিটের ভাষণে ‘তৃণমূল’ শব্দটি সচেতন ভাবে এড়িয়ে গেলেন রাহুল! এদিন সভা শুরুতেই অবশ্যই কর্মসংস্থান ইস্যুতে তৃণমূল নেত্রীকে আক্রমণ করে রাহুল৷ মোদি-মমতার নাম নিয়ে রাহুল বলেন, ‘‘মমতাজি ও মোদিজি আপনাদের এক জনকেও চাকরি দিয়েছে?’’ এরপরই পুরোপুরি বিজেপি বিরোধিতায় নেমে পড়েন সোনিয়া পুত্র৷ মোদিকে আক্রমণ করে বছরে ১২ লক্ষ ও পঞ্চায়েতে ১০ লক্ষ চাকরি দেবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দেন কংগ্রেস সভাপতি৷ পরে, নিজের ভাষণ থামিয়ে ঝাড়খণ্ডের প্রদেশ সভাপতিকে এক মিনিটের জন্য ভাষণ দিতে আর্জি জানান রাহুল৷ নিজের ভাষণ থামিয়ে ফের মঞ্চে কিছু সময় কাটিয়ে বাংলা ছাড়ানে সোনিয়া পুত্র৷
বিজেপি বিরোধী সরকার গঠনে তৃণমূলের সাহচর্য গ্রহণের ক্ষেত্রে কংগ্রেস কোনও ছুঁতমার্গ কেন রাখতে চায় না বলেও এর আগেই ব্যাখ্যা দিয়েছেন সলমন। দুর্নীতি, গণতন্ত্র রক্ষা ও আইনশৃঙ্খলার প্রশ্ন তুললেও কেন্দ্রের সরকার গঠনের সময়ে প্রয়োজনে তৃণমূলকে পাশে পেতে দ্বিধা না করার কথা জানান তিনি৷ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের ধারনা, ফলাফল দিন যতই এগিয়ে আসছে, ততই সরকার গঠনের কথা মাথায় রেখে বিরোধীদের চাটানোর ঝুঁকি নিলেন না রাহুল গান্ধী৷