কলকাতা: প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করার পরেও অসন্তোষ এবং অস্বস্তি কাটছে না ঘাসফুল শিবিরের। ‘পয়া’ শুক্রবারে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করার পর যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তাতে বোঝা যাচ্ছে শুক্রবার হয়তো তার কাছে আর ‘পয়া’ নয়। কারণ একদিকে প্রার্থী হওয়ার পরেও দল ছাড়তে চলেছেন এক তৃণমূল নেত্রী, অন্যদিকে, প্রার্থী হতে না পেরে ক্ষোভ উগ্রে দিয়ে বিজেপিতে যেতে পারেন অন্যজন। সূত্রের খবর, সিঙ্গুরের বিধায়ক তথা মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য যোগ দিতে চলেছেন বিজেপিতে।
ভোট ঘোষণা হওয়ার অনেক আগেই দলের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। রবীন্দ্রনাথের মন্তব্য ঘিরে ব্যাপক চাপ সৃষ্টি হয়েছিল দলের অন্দরেই। পরবর্তী ক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেস ঘোষণা করেছিল বয়স্কদের টিকিট দেওয়া হবে না এবার। সেই প্রেক্ষিতে অনেক বিধায়ক এবং মন্ত্রীর নাম বাদ যাওয়ার মধ্যে রয়েছে মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের নামও। এই প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছিলেন নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটে লড়বেন। তবে এখন জানা গিয়েছে তিনি ভারতীয় জনতা পার্টি শিবিরের নাম লেখাতে চলেছেন, এবং পদ্ম ফুলের প্রতীকেই আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে লড়তে চলেছেন তিনি। যদি রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য সত্যিই বিজেপিতে যান তাহলে অবশ্য ভাবে সিঙ্গুরে তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য পরিস্থিতি অনেক বেশি কঠিন হয়ে যাবে। অন্যদিকে নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারী প্রার্থী হয়েছেন বিজেপির, সেখানেও তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পূর্ণরূপে সুবিধা হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে, যতই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রার্থী হন। তাই নন্দীগ্রাম এবং সিঙ্গুর দুই জায়গাতেই আপাতত ব্যাকফুটে থাকতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
আরও পড়ুন: ‘পয়া’ শুক্রে ঘোষণা, সোমে তৃণমূলের প্রার্থী বদল! ‘গৃহযুদ্ধে’র আগুন ঘাসফুলে!
এদিকে, প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পরেও দলবদল করতে চলেছেন এক তৃণমূল নেত্রী বলে খবর ছড়িয়েছে। মালদহের হবিবপুর থেকে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ঘাসফুলের পতাকায় ভোটে দাঁড়ানোর কথা ছিল সরলা মুর্মুর। কিন্তু হঠাৎই তাঁকে সরিয়ে ওই এলাকা থেকে নতুন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। হবিবপুর থেকে তৃণমূলের নবঘোষিত প্রার্থী হলেন প্রদীপ বাস্কে। বস্তুত, হবিবপুরের তৃণমূল প্রার্থী সরলা মুর্মুকে নিয়ে দিনকয়েক ধরেই শোনা যাচ্ছে গেরুয়া জল্পনা। অর্থাৎ, তাঁর বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে রাজনৈতিক মহলে। এমনকি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য সরলা দেবী কলকাতায় চলে এসেছেন বলেও খবর ভাসছে হাওয়ায়। এমতাবস্থায়, তাঁকে বদলের প্রয়োজন অনিবার্য হয়ে পড়েছিল শাসকদলের জন্য। যদিও এ ব্যাপারে সরাসরি মুখ খোলেনি কেউই। তৃণমূলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, শারীরিক অসুস্থতার জন্য প্রার্থীপদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন সরলা মুর্মু।