অশালীন ভাষায় রবি ঠাকুরের গান, অনুতপ্ত ছাত্রীর মুচলেকা, ক্ষমা করে দিন

অশালীন ভাষায় রবি ঠাকুরের গান, অনুতপ্ত ছাত্রীর মুচলেকা, ক্ষমা করে দিন

মালদা: ভুল হয়েছে, ভাবতে পারিনি এত বড় আকার নিবে৷ আমাদের ক্ষমা করে দিন৷ মুচলেকা দিয়ে আপাতত পরীক্ষায় বসার অনুমতি পেলো অভিযুক্ত চার একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী৷ এদের বিরুদ্ধে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তা ঠিক করবে স্কুল পরিচালন কমিটি৷ শনিবার দুপুরে বৈঠকের পর জানিয়ে দিলেন বারলো গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা দিপশ্রী মজুমদার৷

বসন্ত উৎসবকে ঘিরে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় অশ্লীল মন্তব্য ঘটনার পরপরই মালদা বারলো গার্লস হাইস্কুলের চার ছাত্রীর একটি রবীন্দ্রসংগীতকে বিকৃত করে অশালীন ভাষায় গান করার ঘটনা ঘটে ৷ শুক্রবার সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে সর্বত্র৷ তড়িঘড়ি স্কুল কর্তৃপক্ষ নিজেরা আলোচনা করে অভিযুক্ত চার ছাত্রীর অভিভাবকদের স্কুলে পাঠান শনিবার৷

এদিন স্কুল খোলার পর চার ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে ঘর বন্ধ করে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন বারলো গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা দিপশ্রী মজুমদার৷ ছিলেন অন্যান্য শিক্ষিকারাও৷ দুই ঘণ্টা ধরে চলে রুদ্ধদ্বার বৈঠক ৷ একে একে চার ছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকদের কড়াভাষায় সতর্ক করে দেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ৷ কি অবস্থায় ছাত্রীরা এই ধরনের অশালীন ভাষা ব্যবহার করতে পারলো, তা নিয়ে চলে আলোচনা ৷ অভিযুক্ত চার ছাত্রীর কাছ থেকে গোটা ঘটনা নিয়ে লিখিত জবানবন্দি নেওয়া হয়৷ সেই জবানবন্দি হাতে পাওয়ার পরই অভিভাবকরাও তাতে স্বাক্ষর করেছেন৷

ওই জবানবন্দিতে অভিযুক্ত চার ছাত্রী বলেছেন, ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না৷ এই ঘটনা যে এত বড় আকার নিবে কল্পনায় করতে পারে নি তারা ৷ মুচলেকায় একাধিকবার ভুল হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন ওই চার ছাত্রী৷ তারা বলেছে ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য৷ স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা দিপশ্রী মজুমদার বলেন,  যে চার ছাত্রী এই কাণ্ড ঘটিয়েছে, এদের মধ্যে তিনজন একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগে পাঠরত৷ অপরজন একাদশ শ্রেণীর বাণিজ্য বিভাগে পাঠরত৷ আপাতত ওই ছাত্রীরদের কাছ থেকে তাদের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে৷ ১২ মার্চ থেকে একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা শুরু হচ্ছে৷ সেই পরীক্ষায় তারা বসতে পারবে, স্কুলে আসতে পারবে৷ যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরবর্তীতে পরিচালন কমিটি নিবে৷

প্রধান শিক্ষিকা আরও বলেন, পরিচালন কমিটির সভাপতি তথা মালদার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি পরিদর্শক রীতা চৌধুরি ১২ মার্চ পর্যন্ত ছুটিতে রয়েছেন৷ পরিচালন কমিটি পরবর্তীতে বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত নিবে৷ তবে যা ঘটেছে, তা কেউই ভালো চোখে দেখছে না৷ কারণ , যেসব ভাষা ওই ছাত্রীরা ব্যবহার করেছে তা মুখে উচ্চারণ করার মতো নয়৷ প্রধান শিক্ষিকা বলেন,  যে গানটিকে বিকৃতি করা হয়েছে সেটা স্কুলের মধ্যে হয় নি৷ স্কুলের পোশাক পরে বিদ্যালয়ের বাইরে করেছে৷ সেটা তারা মুচলেখা দিয়ে স্বীকার করেছে৷

রবি ঠাকুরের একটি গানকে বিকৃত করে অশালীন ভাষায় সেটি ব্যবহার করে চার ছাত্রী৷ সেটি মোবাইলে রেকর্ডিং করা হয়৷ এরপর ওই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়৷ বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই নিন্দা এবং সমালোচনার ঝড় বয়ে যায় জেলাজুড়ে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × three =