কলকাতা: রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সকলের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। অথচ শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের জন্য এই প্রকল্পে মেডিকেল অ্যালাউন্স কেটে নেওয়া হচ্ছে। কেন? এই নিয়ে এবার প্রশ্ন উঠে গেল। এই বিষয়ের ওপর আলোকপাত করলেন শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিংকর অধিকারী।
তিনি স্পষ্ট জানান, শিক্ষক শিক্ষাকর্মীদের থেকে অনেক বেশী আর্থিক ক্ষমতাসম্পন্ন পরিবার এই তালিকায় যুক্ত হচ্ছেন। এদিকে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের মেডিকেল অ্যালাউন্স কেটে নেওয়া হচ্ছে, এটা একেবারেই অনুচিত। তাঁর দাবি, সমস্ত শিক্ষক শিক্ষাকর্মীকে জন্য রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ন্যায় ‘পশ্চিমবঙ্গ হেলথ স্কিম’-এর অধীনে আনতে হবে। যত দিন তা না হচ্ছে, ততদিন অন্যান্যদের মতো বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড দেওয়া হোক শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের জন্য, এমনই দাবি তাঁর।
স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প চালু হওয়ার পর শিক্ষক-শিক্ষা কর্মীদের যাঁরা এই প্রকল্প নিয়েছেন তাঁদের বর্তমানে মেডিকেল অ্যালাউন্স কাটা চলছে। মুখ্যমন্ত্রী কয়েক বছর আগে ঘোষণা করে শিক্ষক শিক্ষা কর্মীদের স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের মধ্যে এনেছিলেন। কিন্তু তা মেডিকেল অ্যালাউন্স কেটে নেওয়ার পরিবর্তে। কিন্তু দাবি ছিল রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মত শিক্ষক, শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মীদের জন্য ওয়েস্ট বেঙ্গল হেলথ স্কিম অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্যবীমার আওতায় আনার জন্য কিন্তু তা এখনও পর্যন্ত হয়নি। এখন নতুন করে কোনো নির্দেশিকা শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের জন্য নেই। এখন যেসব শিক্ষক-শিক্ষিকা শিক্ষাকর্মী মেডিকেল অ্যালাউন্স এর পরিবর্তে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প নিতে চান তাদের জন্য এই ব্যবস্থা রয়েছে। যাঁরা রাজি নন তাঁদের জন্য কোনো সুযোগ নেই।
সম্প্রতি, নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, যারা এতদিন কোনো রকম স্বাস্থ্য বীমার সুযোগ পাননি, তাদের সবাইকে এই প্রকল্পের আওতায় বিমার সুযোগ দেওয়া হবে। তবে এই কার্ড পরিবারের মহিলা সদস্যের নামে ইস্যু করা হবে, যদিও গোটা পরিবারের সেই স্বাস্থ্য বীমার সুযোগ পাবে বলে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১ ডিসেম্বর ২০২০ থেকেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকরী হয়ে গেছে। এই প্রকল্পের ফলে প্রত্যেক পরিবার একটি স্বাস্থ্য সাথী কার্ড পাবে, যে কার্ড হচ্ছে স্মার্ট কার্ড। এই কার্ডের মধ্যেই পরিবারের সকলের পরিচয় থাকবে।
তিনি এও স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এই কার্ডের লেনদেন প্রক্রিয়া পুরোটাই ক্যাশলেস হবে। যারা এতদিন কোনো রকম স্বাস্থ্য বীমার আওতায় বা স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের আওতায় ছিলেন না, তারা এবার আবেদন করতে পারবেন। এই কার্ডের অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল, সরকারি হাসপাতালে পাশাপাশি প্রাইভেটেও ব্যবহার করা যাবে। এই ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী জানান, সরকারি হাসপাতাল ছাড়াও ১,৫০০ বেসরকারি হাসপাতালকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। ক্যান্সার, ডাইবেটিস, স্নায়ুরোগ, হৃদরোগের সমস্যা সহ একাধিক জটিল রোগের চিকিৎসা করা যাবে এই প্রকল্পের আওতায়। তবে এই প্রকল্পের আওতায় যারা আসবেন তাদের পরিবার পিছু ৫ লক্ষ টাকা বীমা নির্ধারিত হবে, মাথাপিছু নয়।