মৃতদেহ নিতে অস্বীকার করলে সৎকারের দায়িত্ব নিচ্ছে পুর নিগম

মৃতদেহ নিতে অস্বীকার করলে সৎকারের দায়িত্ব নিচ্ছে পুর নিগম

কলকাতা: করোনায় আক্রান্ত নন, মৃত্যু হয়েছে অন্য কারণে। অথচ দেহ নিতে অস্বীকার করছে তাদের বাড়ির পরিজনরা। করোনা হাসপাতালগুলি থেকে এমন অভিযোগ আকছার আসছে কলকাতা পুর নিগমের কাছে। এর ফলে হাসপাতালগুলিতে জমে যাচ্ছে মৃতদেহ। এবার এই সমস্যার সুরাহা করতে তৎপর হল কলকাতা পুর নিগম। সেক্ষেত্রে পরিবার চাইলে সেই দেহ সৎকার করতে পারে পুর নিগম। শনিবার এমনটাই জানিয়েছেন কলকাতা পুর নিগমর প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। যদিও এই বিষয়ে পরিবারের সম্মতি পত্র লিখিত আকারে দিতে হবে পুরকর্তৃপক্ষকে।

এদিন এ বিষয়ে প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, ‘এমন অনেক মৃতদেহ বিভিন্ন হাসপাতালে পড়ে রয়েছে, যারা করোনা আক্রান্ত হয়নি। কিন্তু তার পরেও তাঁদেরকে পরিবারের লোকেরা ভয়ে নিতে চাইছে না। সেক্ষেত্রে তাদের পরিবার যদি মৃতদেহ না নিতে চায় তাহলে সেটা পুর নিগমকে লিখিত আকারে জানাতে হবে। তাহলে আমরা সেই দেহ সৎকার করে দেব।’

উল্লেখ্য, রাজ্যের করোনায় মৃতের পরিসংখ্যানের হিসেব রাখার জন্য রাজ্য সরকারের তরফ থেকে গঠন করা হয়েছিল করোনা ডেথ অডিট কমিটি। এই কমিটির গাইডলাইন অনুযায়ী, মৃত্যুর কারণ নির্বাচন হচ্ছিল অ্যাক্টিভ ও নন অ্যাক্টিভ কেসের ভিত্তিতে। সে ক্ষেত্রে যে সমস্ত করোনা পজেটিভ রোগীর মৃত্যু আক্রান্ত হওয়ার জন্যই হচ্ছিল, তাদের করোনা অ্যাক্টিভ ডেথ বলে বিবেচনা হচ্ছিল। অন্যদিকে যে সমস্ত করোনায় আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর কারণ অন্য ছিল তারা নন অ্যাক্টিভ কেসের মধ্যে পড়ছিল। আর এই হিসেবেই বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল।করোনা ডেথ অডিট কমিটি নিয়ে প্রথম থেকেই রেকর্ড চাপা দেওয়ার অভিযোগ ছিল বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে। একইভাবে করোনা ডেথ অডিট কমিটির গঠন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল রাজ্যে আগত কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। এরপরে চাপের মুখে পড়ে নবান্নের সাংবাদিক সম্মেলন করে মুখ্যসচিব জানিয়েছিলেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে তথ্য না মেলাতে কিছু ভুল হয়েছিল। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই আশঙ্কা তৈরি হয় সাধারণ মানুষের মনে। সেই আশঙ্কা থেকেই করোনা হাসপাতাল হিসেবে চিহ্নিত হাসপাতালগুলিতে কোনও ব্যক্তি মারা গেলে তার দেহ নিতে অস্বীকার করছেন পরিজনরা। এমনটাই মত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষগুলির। এর ফলে দেহগুলি হাসপাতালের মর্গে জমে চলেছে। এদিকে জায়গার অভাবে চরম অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে হাসপাতালগুলিকে।

বলে রাখা ভালো, করোনা আক্রান্ত মৃতদেহ সৎকারের জন্য ইতিমধ্যেই পরিত্যক্ত জায়গা নির্বাচন করেছে কলকাতা পুর নিগম। সে ক্ষেত্রে করোনায় আক্রান্ত মৃতদেহ পোড়ানোর জন্য নির্বাচন করা হয়েছে তার একটি পরিত্যক্ত জায়গা। অন্যদিকে কবর দেওয়ার জন্য নির্বাচন করা হয়েছে বাগমারির একটি জায়গাকে। এদিকে ধাপাতেও করোনা আক্রান্ত মৃতদেহ সৎকার করতে গিয়ে বাসিন্দাদের বাধার মুখে পড়তে হয়েছিল পুরকর্তৃপক্ষকে। সেক্ষেত্রে এইবার করোনা আক্রান্ত না হলেও সেই ব্যক্তির দেহ দাহ করতে গিয়ে কতটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে কলকাতা পুরকর্তৃপক্ষকে সেটাই এখন দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

11 + six =