নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: কথায় বলে মহম্মদ পর্বতের কাছে না যাওয়ায় পর্বতই মহম্মদের কাছে গেছিল। করোনার আবহে পুজোর আনন্দ এবার বাড়ির দোরগোড়ায়। কোভিড আক্রান্ত ও তাদের পরিবারের জন্য অভিনব উদ্যোগ নিল উত্তর ২৪ পরগনার পাল্লা দক্ষিণপাড়া পুজো কমিটি।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে মনমরা হয়ে বসে থাকা মানুষ ও তাদের পরিবারের জন্য এবার এগিয়ে এল এক পুজো কমিটি। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবে এই অসুস্থ মানুষ ও তাদের পরিবারগুলিকে সামিল করতে অভিনব উদ্যোগ নিল তারা। ঠাকুর দেখাতে মা দুর্গার প্রতিমা নিয়ে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে কোভিড আক্রান্ত বাড়ির দোরগোড়ায় পৌঁছে যাচ্ছেন। উত্তর ২৪ পরগনার পাল্লা দক্ষিণপাড়া পূজা কমিটি লিস্ট ধরে কোভিড আক্রান্তদের বাড়িতে পৌঁছে যাচ্ছেন যাতে একজনও ঠাকুর দেখায় বাদ না পড়েন। পাশাপাশি সেই সব পরিবারের হাতে পূজোর প্রসাদ তুলে দেওয়া হচ্ছে। এই উদ্যোগে খুশি আমজনতা।
পুজো উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, এ বছর তাদের ৮৫ তম বর্ষ। প্রতিবছর পুজোয় তারা নতুনত্বের ছোঁয়া রাখেন। পাশাপাশি সমাজসেবার কাজ করেন। এবছরের করোনা আবহে করোনা আক্রান্ত রোগী ও তাদের পরিবারগুলির বাইরে বেরনো বন্ধ। ফলে ঠাকুর দেখতে পাবেন না তারা। তাই তাদের জন্য এমন অভিনব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে নিজেদের পুজো প্যান্ডেলে আরেকটি ঠাকুর রেখেছেন উদ্যোক্তারা। সেখানে দর্শনার্থীরা চাইলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিমা দর্শন করতে পারবেন।
করোনা আবহে পুজোর আগে থেকেই ভিড় নিয়ে আশঙ্কিত ছিল প্রশাসন। বারবার বার্তা দেওয়া হয় যাতে ভিড় করে ঠাকুর দেখা না হয়। এবার হাইকোর্টের তরফেও ভিড় এড়াতে প্যান্ডেলের ভিতরের এলাকা কনটেন্টমেন্ট জোন করারও নির্দেশিকা জানি হয়েছে। তাই পুজোয় চুটিয়ে ঠাকুর দেখা কারো পক্ষেও সম্ভব নয়। তবুও সুস্থ মানুষজন পাড়ার দুয়েকটি প্রতিমা চাইলে দেখতে পাবেন। কিন্তু করোনা আক্রান্ত মানুষ ও তাদের পরিবারগুলির পক্ষে তো তাও সম্ভব নয়। বঞ্চিত এই মানুষগুলির কথা ভেবেছেন পাল্লা দক্ষিণপাড়া পূজা কমিটি। তাদের উদ্যোগেই এবার মায়ের আরাধনা সত্যিই সর্বজনীন হয়ে উঠবে।