কলকাতা: আপার প্রাইমারির শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে জলঘোলার অভিযোগ আগেই উঠছে। আদালতের নির্দেশ অনুসারে মেধা তালিকা প্রকাশিত হলে তা নিয়েও উঠেছে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট দফতরে জানিয়েও কোনও সদুত্তর পাননি প্রার্থীরা। অবশেষে ভার্চুয়ালি অনশন মঞ্চের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তাঁরা। বুধবার সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত লাইভ স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে গণঅনশনে বসেছিলেন আপার প্রাইমারি সংগ্রামী মঞ্চের হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের পাশে ছিলেন অধ্যাপক, নাট্যব্যক্তিত্ব, সাংবাদিকসহ বিশিষ্টজনরা।
এই নিয়ে ৭ বছরে পড়ল স্কুল সার্ভিস কমিশনের আপার প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া। এখনও অথৈ জলে চাকরিপ্রার্থীদের ভবিষ্যৎ। শিক্ষা দফতর দেওয়া নিয়োগ বিধি অমান্য করার যে অভিযোগ উঠেছে, সেই মামলা অবিলম্বে মিটিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দাবিতে এর আগে বহু কর্মসূচি পালন করলেও কোনও সদুত্তর পাননি তাঁরা। এরই মধ্যে করোনা সঙ্কটের জেরে লকডাউন জারি হয়। সেই পরিস্থিতিতেও আন্দোলন চালিয়ে যেতে ৫ জুন স্কুল সার্ভিস কমিশনে 'গেজেট পাঠাও গেজেট পড়াও' শীর্ষক গণ ইমেল কর্মসূচী পালন করেছিলেন তাঁরা।
এছাড়াও ৮ জুন রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, রেজিস্টার জেনারেল ও আইনমন্ত্রীর কাছে অনলাইন পিটিশন জমা দেয় আপার প্রাইমারি সংগ্রামী মঞ্চ। তারও দু'সপ্তাহ কাটা সত্ত্বেও কোনও ইতিবাচক সাড়া না পেয়ে ভার্চুয়াল অনশনের সিদ্ধান্ত নেয় তারা। বুধবার সকাল ছ'টা থেকে সন্ধে ছ'টা পর্যন্ত চলে এই অনশন মঞ্চ। সাত বছর ধরে পড়ে থাকা নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য একমাস সময়ও দেওয়া হয় তাদের তরফে। আগামী ২৪ জুলাইয়ের মধ্যে এই সমস্যা না মিটলে চাকরিপ্রার্থীরা তাঁদের পরিবার-পরিজনদের নিয়ে অনশনে বসবেন বলেও জানিয়েছেন। প্রয়োজনে নবান্ন অভিযানে যেতেও প্রস্তুত তাঁরা। বুধবারের ১২ ঘণ্টার ওই অনশনের পক্ষে ছিলেন সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। আপার প্রাইমারি সংগ্রামী মঞ্চের পক্ষে এদিন বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক পবিত্র সরকার, অধ্যাপক তরুণকান্তি নস্কর, অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র, অধ্যাপক নন্দিনী মুখোপাধ্যায়, প্রাক্তন অধ্যক্ষ দীপালী ভট্টাচার্য, নাট্যকার চন্দন সেন, চিত্রপরিচালক অনীক দত্ত, সমাজ সেবক ও লেখক সারদা প্রসাদ কিস্কু, ভারত জাকাত আদিবাসী পরগনার সদস্য বাপি সোরেনে মতো বিশিষ্টরা।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে নিয়োগ সংক্রান্ত নিয়মবিধি অমান্যের অভিযোগ উঠেছিল আগেই। অবশেষে আইনি পথ অবলম্বন করলেও নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছতা ফেরেনি। প্ররোচনার শিকার হয়েছেন প্রশিক্ষিত প্রার্থী থেকে শুরু করে সংরক্ষিত শূন্যপদের প্রার্থীরাও। আদালতের নির্দেশে যে মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল, তাতেও রয়েছে বহু অসঙ্গতি। সেই সমস্যা মেটানোর দাবিতেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ২৪ জুন ভার্চুয়াল অনশনে বসেছিল আপার প্রাইমারি সংগ্রামী মঞ্চ।