কলকাতা: করোনা আক্রান্তের দেহ নিয়ে আরও একবার টানাপোড়েনের ছবি দেখল কলকাতা৷ প্রায় ৭ ঘণ্টা পর করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির দেহ নিয়ে গেল কলকাতা পুরসভা৷ ঘটনাটি সন্তোষপুরে৷
আরও পড়ুন- বাড়ছে করোনা, মোদী-শাহের পদত্যাগ চেয়ে ‘আত্মনির্ভর’ খোঁচা মমতার
মৃত ব্যক্তি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন৷ উপসর্গহীন আক্রান্তের ছিলেন তিনি৷ কিন্তু আজ ভোর রাতে মৃত্যুর পর প্রায় ৭ ঘণ্টা সন্তোষপুরের বাড়িতেই পড়ে থাকে তাঁর মৃতদেহ৷ অভিযোগ, বারবার বলা সত্বেও দেহ নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেনি পুরসভা৷ অবশেষে প্রায় সাত ঘণ্টা পর তাঁর দেহ নিয়ে যাওয়া হয়৷
শনিবার ভোর পৌনে ৫টা নাগাদ মারা যান কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যাতত্ব বিভাগের এই অধ্যাপক৷ কিন্তু তাঁর মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার কোনও বন্দোবস্ত করা যাচ্ছিল না৷ পরিবারের তরফে সার্ভে পার্ক থানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়৷ সেখান থেকে যোগাযোগ করা হয় পুরসভার সঙ্গে৷ কিন্তু এর পরেও দেহ নিয়ে না যাওয়ায় উষ্মা তৈরি হচ্ছিল পরিবারের সদস্যদের মনে৷ আশেপাশের মানুষের মধ্যেও আতঙ্ক তৈরি হয়৷ কারণ সময় পেরলেও দেহ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল না বাড়ি থেকে৷ সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রচার হওয়ার পরেই থানা থেকে ওই অধ্যাপকের বাড়িতে ফোন করা হয়৷ পরে কলকাতা পুরসভা থেকে শববাহী গাড়ি এসে দেহ ধাপায় নিয়ে যাওয়া হয় সৎকারের জন্যে৷
প্রসঙ্গত, বুধবার করোনা আক্রান্ত হন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যাতত্বের এই অধ্যাপক৷ ওই দিন তাঁর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজেটিভ আসে৷ চিকিৎসকদের পরামর্শে তিনি বাড়িতেই ছিলেন৷ জ্বর ছাড়া অন্য কোনও উপসর্গ তাঁর ছিল না৷ তাই বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু পরিবারের সদস্যরা কোনও ঝুঁকি নিতে চাননি৷ আজই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু তার আগেই ভোরে মৃত্যু হয় অধ্যাপকের৷
আরও পড়ুন- বিরাট বিস্ফোরণ ভাঙড়ে, গুরুতর আহত ৫
জানা গিয়েছে, গতকাল সন্ধে বেলা অক্সিজেনের বন্দোবস্ত করার চেষ্টাও শুরু করেছিলেন পরিবারের সদস্যরা৷ যেহেতু তিনি বাড়িতে রয়েছেন, তাই অক্সিজেন রেখে দেওয়া জরুরি বলে মনে করছিলেন তাঁরা৷ সেই মতো বিভিন্ন দোকানে অক্সিজেনের খোঁজও শুরু করেন৷ তবে একটা জায়গা ছাড়া অন্য কোনও কোথাও অক্সিজেন মেলেনি৷ তবে যেখানে অক্সিজেন মেলে, সেখান থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, তাঁর চেয়েও মুমূর্ষ রোগীরা অক্সিজেনের অপেক্ষায় রয়েছেন৷ তাঁদেরকেই অক্সিজেন সিলিন্ডার দিতে চান তাঁরা৷ তবে এতে আপত্তি জানাননি অধ্যাপক৷ বলেছিলেন, যাঁর সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, তাঁকেই যেন দেওয়া হয়৷ ভোররাতে তাঁর নিজেরই অক্সিজেনের প্রয়োজন পড়ে৷ কিন্তু সেই সময় অক্সিজেন সিলিন্ডার জোগাড় করার আর সময় ছিল না৷ এর পরেই মৃত্যু হয় তাঁর৷