ধেয়ে আসছে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়, জরুরি বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী, ক্ষুব্ধ নবান্ন!

ধেয়ে আসছে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়, জরুরি বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী, ক্ষুব্ধ নবান্ন!

 

কলকাতা: আরও শক্তি বাড়িয়ে বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত হয়েছে প্রবল ঘূর্ণিঝড়৷ শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়তে পারে দিঘার উপকুলে৷ আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, এই মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড়টি দিঘা থেকে ১০০০ কিমি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে ধীর গতিতে অবস্থান বদল করছে৷ আর কয়ের ঘণ্টার মধ্যে তা শক্তি বাড়িয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হয়ে উত্তর দিকে এগিয়ে যাবে৷ উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর হয়ে বাংলার দিকে এগিয়ে আসবে ঝড়৷ আগামী বুধবার বিকেলে দিঘা হয়ে ঝড় বয়ে যাবে বাংলাদেশের অভিমুখে৷ করোনার পরিস্থিতির মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে জরুরি বৈঠকে বসতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷

ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবেলায় প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে জরুরি বৈঠকের ডাক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি৷ আজ বিকেল চারটেয় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ঘূর্ণিঝড় ঠেকাতে প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে বৈঠক ডাকা হয়েছেষ৷ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে থাকতে পারেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে এনডিএমের আধিকারিকদের৷ অন্যদিকে, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় বৈঠক ডেকেছেন অমিত শাহ৷ আজ দুপুর একটায় নর্থ ব্লকে এই বৈঠক হওয়ার কথা৷ বৈঠক ডাকা হয়েছে রাজ্যের রেসিডেন্ড কমিশনারকে৷ রেসিডেন্ট কমিশনারকে এভাবে ঢাকায় নবান্ন ক্ষুব্ধ হয়েছে বলে সূত্রের খবর৷ রাজ্যকে না জানিয়ে ডাকা হয়েছে কমিশনারকে৷ দাবি করেছে নবান্ন৷ করোনা ও ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সক্রিয়তা নিয়ে পদ্ধতিগতভাবে আপত্তি জানিয়েছে রাজ্য৷

ঘূর্ণিঝড়ের জেরে দুর্যোগ শুরু হবে মঙ্গলবার৷ দক্ষিণ বঙ্গের উপকূলবর্তী দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি এবং কলকাতায় বৃষ্টি পূর্বাভাস রয়েছে৷ দুপুরের পর ৪৫-৬৫ কিমি প্রতি ঘণ্টা বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে বলেও দেওয়া হয়েছে পূর্বভাস৷ বুধবার উপকূলের জেলা-সহ ৭ গাঙ্গেয় ৭ জেলায় মাঝারি থেকে ভারী, অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস৷ ওই দিন সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড়ে উপকূল ছুঁয়ে পারে বলে আশঙ্কা৷ ঝড়ের গতিবেগ ১৪০ কিমি থাকতে পারে৷ ঘূর্ণিঝড় বলয়ে ঝড়ের গতিবেগ থাকতে পারে ১৫৫ কিমি পর্যন্ত৷

ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাসের পর সতর্ক প্রশাসন৷ কেন্দ্রীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল উপকূলে পৌঁছে গিয়েছে৷ নৌবাহিনীকে প্রস্তুত থাকাতে বলা হয়েছে৷ এনডিআরএফের ৭০ জনের ২টি দল কাকদ্বীপ ও সাগরে মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷ শুরু হয়েছে মাইকিং৷ নিচু এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে আনা কাজ শুরু হয়েছে৷ ত্রাণ শিবিরে দূরত্ব বজায় রাখার হচ্ছে৷ ত্রাণ সামগ্রী মজুত রাখা হয়েছে৷ দুর্বল নদীবাঁধগুলিও মেরামতির কাজে হাত লাগিয়েছেন স্থানীয়রা৷

এসইউসিআইয়ের প্রাক্তন বিধায়ক ও রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তরুণকান্তি নস্কর জানিয়েছেন, ‘‘দক্ষিণ ২৪ পরগনার নদীবাঁধগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ৷ আয়লায় যে ক্ষতি হয়েছিল তা সম্পূর্ণ মেরামত হয়নি৷ তারপর গত বুলবুলে ঝড়ে আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ এই অবস্থায় আম্ফান ঘুর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় এই জেলার নদী ও সমুদ্র সংলগ্ন এলাকার মানুষ অত্যন্ত আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন৷ কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার যদি আজ থেকেই জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ সংস্কারের ব্যবস্থা না করে তাহলে বহু মানুষ ও গবাদি পশুর প্রাণ যাবে, ঘরবাড়ি ও কৃষি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷ এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমাদের দাবি অতি দ্রুত সরকার যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির মতো করে এই কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ুক৷ প্রয়োজনে সরকার জনসাধারণের সাহায্য নিয়েও এই কাজে এগোতে পারে৷ এছাড়া ওই এলাকাগুলির মানুষকে সুরক্ষিত স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থাও করুক৷ এই মর্মে আমি প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আজ চিঠি লিখেছি৷’’

সঠিক খবর পেতে নজর থাকুক AajBikel.com-এর পাতায়…


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

11 − 6 =