সিওপিডিতে আক্রান্ত ছিলেন বুদ্ধদেব! এটা আসলে কতটা খতরনাক? জানুন ঠেকানোর উপায়

কলকাতা: সিওপিডিতে আক্রান্ত ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।এই সিওপিডি কতটা খতরনাক?শ্বাসনালী কে চুপসে দেয় সিওপিডি। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ফুসফুসের অবস্থা কী হয়েছিল জানেন?লক্ষণ জেনে আগে ভাগেই সাবধান হোন।…

কলকাতা: সিওপিডিতে আক্রান্ত ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।এই সিওপিডি কতটা খতরনাক?শ্বাসনালী কে চুপসে দেয় সিওপিডি। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ফুসফুসের অবস্থা কী হয়েছিল জানেন?লক্ষণ জেনে আগে ভাগেই সাবধান হোন।

চিকিৎসকরা বলছেন, সিওপিডির সমস্যা থাকলে অবশ্যই বিড়ি–সিগারেট থেকে দূরে থাকুন। প্যাসিভ স্মোকিংও চলবে না, আশপাশে কেউ ধূমপান করলে সেখান থেকে সরে আসুন, নয়তো নাকে চাপা দিন। কিন্তু বুঝবেন কিভাবে যে আপনি সিওপিডিতে আক্রান্ত?

ফুসফুসের রোগে দীর্ঘদিন ধরে আক্রান্ত ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। চিকিৎসকদের ভাষায় যাকে বলে ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ বা সিওপিডি।

জেনারেলি সিওপিডিতে শুরুর দিকে ঘুম থেকে ওঠামাত্র কাশি হতে থাকে, সঙ্গে শ্বাসকষ্ট হয়। কাশতে কাশতে কিছুটা কফ উঠলে কষ্ট খানিকটা কমে। এই রোগের ক্ষেত্রে যত দিন যায়, ফুসফুসের কোষগুলো ততই অকেজো হতে শুরু করে। এই রোগে আক্রান্ত হলে ফুসফুসের মধ্যে দিয়ে বায়ু ঠিক মতো চলাচল করে পারে না। পরের দিকে কাজকর্ম না করলেও দমের ঘাটতি হতে থাকে। ফুসফুসের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে শুরু করে। ঋতু পরিবর্তনের সময় ঠান্ডা লেগে, বুকে কফ বসে শুরু হয় প্রবল কষ্ট। প্রথম দিকে সে কষ্ট ওষুধে কমে৷ পরে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা করাতে হয়। ফুসফুসের অকেজো কোষগুলোর আর মেরামতি হয় না। তবে কিভাবে এ রোগের হাত থেকে নিস্তার পাওয়া সম্ভব?

রাজ্যের বিশিষ্ট ফুসফুস রোগ বিশেষজ্ঞ একবার বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করেছিলেন। তাতে তাঁর মনে হয়েছিল, খুব অল্প বয়স থেকেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে। যেটা পরে বড় হয়ে দেখা দেয়। দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন তিনি। যেইসময় পরীক্ষা করেছিলেন তখন হয়তো একঘর থেকে অন্য ঘরে যাতায়াত করতেও পারতেন না। প্রায় গোটা ফুসফুসই খারাপ হয়ে গিয়ে হয়ত ২০ কি ৩০ ভাগ কাজ করছিল। ফলে ওঁর পক্ষে স্বাভাবিক জীবন যাপন এমনকী ঘরের ভেতরেও হাঁটা চলা করতে সমস্যা হত বলেই তাঁর মনে হয়েছে। ওই চিকিৎসকের মতে, সিওপিডিতে ফুসফুসের অবস্থা এমন হয় যে একসময় শরীরে পর্যাপ্ত অক্সিজেন ঢুকতে এবং সেখান থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড বেরতে পারেনা। যার জন্য শরীরে তৈরি হয় নানা সমস্যা। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য’র ক্ষেত্রে এটাই হয়েছিল।

সেক্ষেত্রে এই রোগকে ঠেকিয়ে রাখার জন্য, ধূমপানের অভ্যাস ছেড়ে দেওয়া আর জীবনধারায় বদল আনা দরকার বলে মনে করেন বিশিষ্ট চিকিৎসকদের একাংশ। পাশাপাশি ফুসফুস চাঙ্গা রাখতে নিয়মিত হাঁটাহাটি করতে হবে। দিনে নির্দিষ্ট় সময় বরাদ্দ করে নিয়ম করে হালকা ব্যায়াম করুন। সিওপিডির ক্ষেত্রে ব্রিদিং এক্সারসাইজ বা প্রাণায়ম বেশ উপকারী। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নির্দিষ্ট সময় অন্তর নিউমোনিয়া ও ইনফ্লুয়ে়ঞ্জার টিকা নিতে হবে। প্রোটিনসমৃদ্ধ সুষম খাবার খেতে হবে৷ সঙ্গে খান ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার। যেমন, টাটকা রঙিন শাকসব্জি ও ফল, শুকনো ফল, বাদাম। ধোঁয়া, ধুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। আর মনে করে মাস্ক ব্যবহার করুন।