হাওড়া: এবার নাম না করে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে হাওড়ায় ঢুকতে না দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন দলের সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার হাওড়া ডুমুরজলায় তৃণমূল কংগ্রেসের বিজয়া সম্মেলনীর অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে এই হুঁশিয়ারি বার্তা দেন প্রসূন।
এদিন নাম না করে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ভাই, ইলেকশনের সময় যে যে পালিয়ে গিয়েছিলে, সে সে হাওড়ায় ঢুকতে পারবে না। হাওড়ায় ঢুকতে দেব না। যত বড়ই মাতব্বর হও। সেদিন তোমরা ভেবেছিলে দিদি হেরে যাবে। দিদি যতদিন জীবিত ততদিনই দিদি থাকবে। কেউ হারাতে পারবে না। বাড়ি চলে গেলে। প্লেনে উড়ে গেলে। কি সুন্দর খাওয়াদাওয়া পেলে। আবার হেরে গিয়ে এখন দিদির ছবি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছ। কোনও কারণেই মানতে পারব না।’’
খানিক থেমে যোগ করেছেন, ‘‘কাগজে দেখলাম উনি বলেছেন, ওনাকে সবাই ভুল বুঝিয়েছে। আরে, বুড়ো দামড়া ৫০ বছর বয়সে ভুল বুঝলেন কী করে ? মমতাদি খাইয়ে পড়িয়ে বড় করল। আর ভুলে গেলেন? ভাই মানতে পারব না আমি। যদি দরকার হয় পার্টি যদি আমাকে বলে পার্টি ছেড়ে চলে যান তাহলে চলে যাব। দিদির পায়ের তলায় বসে থাকব৷ কিন্তু যারা ছেড়ে চলে গেছে তাদের কাউকে ঢোকানো হবে না। দিদির মন মায়ের মন। তাই তাদের ডেকেছে। আমি বেঁচে থাকা পর্যন্ত ওদের কাউকে হাওড়ায় আসতে দেওয়া হবে না৷ এটাই সোজা কথা বলে দিলাম।’’
অন্যদিকে, এদিন হাওড়ায় এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে কোনও সিদ্ধান্তই নিয়েছেন তা রাজ্য এবং দেশকে লাভবানই করেছে। ক্ষতিগ্রস্থ করেনি। ফলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তের উপর দলের কর্মীদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। ২০১১ সালে আমরা ক্ষমতায় আসার পর বহু লোককে দলে ঢুকতে দেখেছেন। এটা নতুন নয়। কিন্তু সবচেয়ে বড় ব্যাপারটা হল যে এখানে যে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা আবেগ নিয়ে দল করেন। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের থেকে তৃণমূল কংগ্রেস দলটা একটু আলাদা। ফলে এদের কাছে আবেগ নিয়ে যখন প্রশ্ন করবেন তারা একটা উত্তর দিতে পারবেন যে আমি দলের খারাপ সময়েও দলের সঙ্গে ছিলাম এবং দলের ভালো সময়েও দলের সঙ্গেই ছিলাম। যে সমস্ত নেতারা দল ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন তারা ফিরেছেন তাদের শাস্তি একটাই। আগে যখন তাঁরা মঞ্চে উঠতেন বক্তৃতা করতেন প্রত্যেকটা কর্মী মন থেকে হাততালি দিতেন। আবার সেই কর্মীদের হাততালিটা আর তারা পাবেন না। তাঁরা মঞ্চে উঠবেন নেতা হবেন হয়তো আগামী দিনে ভবিষ্যতে তারা এমএলএ এমপি মন্ত্রী হবেন। কিন্তু ওই জায়গাটা আর পাবেন না। এটাই তাদের শাস্তি।’’
পুরভোটে বিজেপির ফলাফল কি হতে পারে তা নিয়ে দেবাংশু বলেন, “বিষয়টা হচ্ছে বিজেপি কোনও রাউন্ডে লিড পাবে কিনা এটা ওরাই জানে না। আমি ওয়ার্ড এর কথা বলছি না। হাওড়া, কলকাতা নিয়ে একটা সংবাদপত্রের খবর যে বিজেপির চিন্তাধারাই এই যে কিভাবে দ্বিতীয় হওয়া যায়। এখানে দ্বিতীয় হওয়ার জন্যই ওরা পুরভোটে লড়াই করছে। প্রথম হওয়ার জন্য কোনও কম্পিটিশন হাওড়া কলকাতায় এখন কোথাও নেই। ফলে লড়াইয়ের জায়গাটা এই মুহূর্তে এখন বাংলায় নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলছেন তা করে দেখিয়েছেন। মানুষ তাই দেখেছে।”