বলেছিলেন,‘বাংলায় শীর্ষে থাকবে BJP, কেন্দ্রে হবে ৩০০ পার’, ডাহা ফেল PK-র ভবিষ্যদ্বাণী

কলকাতা: ২৪-এর ঝড়ে ওলট-পালট বুথ ফেরত সমীক্ষা৷ বিফলে পিকে’র ভবিষ্যদ্বাণী৷ জাতীয় রাজনীতিতে স্বপ্নের মতো ‘কামব্যাক’ মমতার৷ আশাতীত উত্থান বিরোধী জোটের৷ রাজনৈতিক মহল বলছে, এভাবেও ফিরে…

কলকাতা: ২৪-এর ঝড়ে ওলট-পালট বুথ ফেরত সমীক্ষা৷ বিফলে পিকে’র ভবিষ্যদ্বাণী৷ জাতীয় রাজনীতিতে স্বপ্নের মতো ‘কামব্যাক’ মমতার৷ আশাতীত উত্থান বিরোধী জোটের৷ রাজনৈতিক মহল বলছে, এভাবেও ফিরে আসা যায়?

 

যদিও ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের ভবিষ্যদ্বাণী ছিল, গত বারের চেয়েও এবার বাংলায় ভালো ফল করবে বিজেপি৷ পশ্চিমবঙ্গে পয়লা স্থান দখল করবে পদ্ম শিবির৷ তিনি আরও দাবি করেছিলেন, কেন্দ্রে একক ভাবে ৪০০ পার না করলেও, ৩০০-র বেশি আসনে জিতবে বিজেপি৷

একবার নয়, একাধিকবার জাতীয় সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে পিকে বলেছিলেন, “বিধানসভা ভোটে বিজেপির ফলাফল দেখে লোকসভা ভোটের সম্ভাব্য ফল নিয়ে বিচার করা ঠিক হবে না।” একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভোট কুশলী এটাও বলেছিলেন যে, “ সন্দেশখালির মতো ঘটনা যখন ঘটে, তখন যে যাই বলুক না কেন, শাসক দলের ক্ষতি তো হয়ই। তবে সন্দেশখালির মতো ঘটনা ঘটুক বা না ঘটুক বাংলায় বিজেপি বাড়ছে, এটাই বাস্তব।”

 

তবে প্রশান্তের করা যাবতীয় ভবিষ্যদ্বাণীই বিফলে। কেন্দ্রে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ পাওয়া তো দূর, একার ক্ষমতায় সরকার গঠনের জন্য জাদু সংখ্যাও ছুঁতে পারেনি বিজেপি। ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের ফলাফলের ধারেকাছেও নেই তারা। পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা আরও খারাপ। একেবারেই ফিকে মোদী ম্যাজিক৷ গত বারের চেয়ে আসন সংখ্যা কমে ১২-তে ঠেকেছে গেরুয়া দল।

 

ভারতীয় রাজনীতিতে পিকে বেশ পরিচিত মুখ৷ নির্বাচনী কৌশল রচনা কারও পেশা হতে পারে, সেটা প্রশান্তকে না দেখলে কোনও দিনও হয়তো জানতেই পারত না ভারত। ২০১৪ সাল থেকে যে পথে গড়িয়েছে ভারতীয় রাজনীতির চাকা, তাতে ‘কিং মেকার’ হিসেবে প্রশান্তের ভূমিকা অনবদ্য বলে মনে করছিলেন অনেকেই। প্রশান্ত কিশোর অবশ্য খাতায়কলমে অনেক দিন আগেই ভোটকুশলীর পেশা ছেড়েছেন৷ তবে তাঁর মতামতের অপেক্ষায় থাকেন অনেকেই। কিন্তু ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে প্রশান্তের ভবিষ্যদ্বাণী ডাহা ফেল করার পর, তাঁর দূরদর্শিতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে৷

 

মঙ্গলবার ভোটগণনা শুরু হওয়ার পর দেখা যায় এগিয়ে গিয়েছে বিজেপি৷ কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একটা বিষয় স্পষ্ট হয়ে যায় যে, লড়াই সহজ নয়। এক এক সময় তো বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটকে ছাপিয়ে যাচ্ছিল ‘ইন্ডিয়া’৷ কখনও আবার টক্কর ছিল সমানে সমানে। তবে দিনের শেষে ম্যাজিক ফিগার ছুঁতে পারেনি বিজেপি। তাদের প্রায় ধরেই ফেলেছিল ইন্ডিয়া জোট৷ অথচ এক সময় বিরোধী জোটের অভ্যন্তরীণ বোঝাপড়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন খোদ প্রশান্ত কিশোর।

 

 

পিকে যে শুধু পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে ভবিষ্যদ্বাণীতে ব্যর্থ হয়েছেন তা নয়, উত্তরপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্র নিয়েও তাঁর অনুমান ডাহা ফেল৷ তবে নরেন্দ্র মোদীর ব্র্যান্ড ভ্যালু যে আগের মতো নেই, সে কথা বহু বারই জানিয়েছিলেন প্রশান্ত৷ তা বলে বেকারত্ব, মুদ্রাস্ফীতি, ঘৃণাভাষণ নিয়ে মোদীর বিরুদ্ধে সার্বিক ক্ষোভ রয়েছে, তেমনটাও নয়৷ তিনি এও বলেছিলেন যে, কেন্দ্রে সরকার চালাতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদীকে বাধার মুখে পড়তে হতে পারে, বিরোধিতা আরও বাড়তে পারে৷ সে সব অবশ্য বিজেপি-র ভোটবাক্সে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু মঙ্গলবার নির্বাচনের ফলাফল দেখার পর সব হিসেব পাল্টে গেল৷ এটা স্পষ্ট যে মানুষ অসন্তুষ্ট৷ ফলে এটা বলা যেতেই পারে প্রশান্তের ভবিষ্যদ্বাণী বিফল৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *