নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: করোনা পরিস্থিতিতে যেখানে সতর্কতা অবলম্বনই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের একমাত্র হাতিয়ার সেখানে সাধারণ মানুষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেছে। কিন্তু সরকারিভাবে যেখানে করোনা সতর্কতা বিধি জারি করা হয়েছে সেখানে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিতেই এই সতর্কতা বিধি লঙ্ঘন দৃষ্টান্তমূলক। আরও উল্লেখযোগ্য বিষয় হল স্বাস্থ্যপরিষেবা প্রদাণকারী প্রতিষ্ঠানগুলিকে কেন্দ্র করেই এই ধরনের অসতর্কতার অভিযোগ উঠছে।
এই অভিযোগগুলি সরকারি উদাসীনতার চিত্রকেই প্রকাশ্যে নিয়ে আসছে। যেমন উত্তর চব্বিশ পরগনার বারাসাত সদর হাসপাতালের উন্মুক্ত স্থানে রাস্তার পাশে পড়ে থাকছে ব্যবহার করা পিপিই কিট গ্লাভস ও মাস্ক। এমনকি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দপ্তর সংলগ্ন জায়গাতেই পড়ে থাকতে দেখা গেল এই সমস্ত জিনিস। আরও আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই দৃশ্য হাসপাতাল চত্বরে আগতদের নজরে আসার পরেই, গ্লাভস বা অন্যান্য সুরক্ষা ব্যাবস্থা ছাড়াই সেই সমস্ত জিনিস সাফাইয়ের কাজ শুরু করেন হাসপাতাল চত্বরের সরকারী সাফাই কর্মীরা।
হাসপাতালের মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা তাপস কুমার রায়ের কাছে এবিষয়ে জানতে চাওয়া হলে, পুরো বিষয়টি অনভিপ্রেত এবং অস্বাস্থ্যকর বলে স্বীকার করে নিয়ে তিনি জানান, কে বা কারা এগুলি সেখানে ফেলে গেছে তা জানা নেই। তবে কাজটি বহিরাগত কোনো অ্যাম্বুলেন্স চালকের হতে পারে বলেই ইঙ্গিত করেছেন তিনি। হাসপাতাল সুপারকে এনিয়ে নজরদারি বাড়ানোর কথা বলবেন বলেও জানিয়েছেন তাপস বাবু।
যদিও হাসপাতাল চত্বরে বাইরের কেউ এসে ব্যবহার করা পিপিই কিট গ্লাভস ও মাস্ক ফেলে যেতে পারে একথা মানতে নারাজ হাসপাতালে আগত সাধারণ মানুষ। তাঁদেরই একজনের কথায় এভাবে সংক্রমণ বৃদ্ধির সম্ভাবনা আরও বেশি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির বলেই এই ধরণের ঘটনা ঘটছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সরকারি কঠোর নির্দেশিকা, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও খোদ সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলির অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সংক্রান্ত অসচেতনতা ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপর অভাব নিয়ে অভিযোগ নতুন কিছু নয়। তবে করোনা পরিস্থিতিতে যখন বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার সরকারিভাবে নির্দেশিকা রয়েছে, সেখানে বারাসাত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এই উদাসীনতা শুধু সরকারি কর্মী বা কর্তৃপক্ষকেই নয় বরং সরাসরি সরকারকেই কাঠগড়ায় তুলছে।